মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে যুক্তফ্রন্ট

মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে যুক্তফ্রন্ট
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক জোট 'যুক্তফ্রন্ট' থেকে তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানান। মুহাম্মদ ইবরাহিম এই ফ্রন্টের প্রধান।

আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে যুক্তফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ইবরাহিম বলেন, 'আমরা যুক্তফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেব। আমরা তার জন্য বড় ঝুঁকি নিচ্ছি, অতীতেও নির্বাচনে বড় বড় দল, ছোট ছোট দল অংশ নিয়েছে। আমরাও অনেক বড় দল নই—ছোট দল নির্বাচনে অংশ নেব, আশঙ্কা নিয়ে। আশঙ্কার উত্তর হচ্ছে সরকারের ওয়াদা যে, আমরা এবার ২০২৪ সালের নির্বাচনকে জাতির সামনে এবং বিশ্বের সামনে গ্রহণযোগ্য করতে চাই।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন প্রশ্ন আছে আগামী নির্বাচনগুলো কী রকম হবে। আমরা আশা করছি, আগামী নির্বাচন অতীতের তুলনায় অধিকতর স্বচ্ছ ও অবাধ হবে। আমরা আশা করছি, বর্তমান রাজনৈতিক সরকার তাদের অতীতের ভুলগুলোকে মূল্যায়ন করে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না। কারণ যদি অতীতের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন, সেটি তাদের বিপক্ষে যাবে। জনগণের কষ্ট বাড়াবে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অধিকতর ক্ষতি করবে।'

আপনার জোট কতটি আসলে প্রার্থী দেবে এবং আপনি কি না আশা করেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি আশা করি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হবে। অতিরিক্ত আশা করি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। এর নিশ্চয়তা আমার পক্ষে কোনো দিনও দেওয়া সম্ভব না—কারণ যদি না হয়, আমিও একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি হবো।'

তিনি বলেন, 'আমরা কয়টি আসনে দেবো সেটি এখনো ঠিক করিনি। আমাদের এই মুহূর্তের প্রস্তুতি ১০০টি।'

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেন এই আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে আপনারাও ছিলেন। এখন নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই মনে করছেন—জানতে চাইলে ইবরাহিম বলেন, 'আমি মনে করি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে কিন্তু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি আসছে না। না আসার কারণে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, যা আছে তার মধ্যে অংশ নেব নাকি সব কিছু থেকে বিরত থাকব? আমি প্রথম বিকল্পটা বেছে নিয়েছি।'

কোনো চাপের কারণে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আমার পক্ষে এখন সমীচীন না।'

কয়েক দিন আগে আপনি বলেছিলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে আত্মহত্যার সামিল। আপনাদের হঠাৎ করে কেন আত্মহত্যা করার ইচ্ছা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অক্ষমতা যে, আর তো পেরে উঠছি না এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। এটা একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে ২৮ অক্টোবরের পরে। আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমি কি নিশ্চুপ থাকব নাকি আমি বিকল্প একটা পন্থা অবলম্বন করব। আমি বিকল্প অবস্থানটা নিলাম, এই মর্মে যে, আমার যে কথাগুলো বলার আর জায়গা নেই সেটা যদি আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন কবুল করেন পার্লামেন্টে বলার। আপনারা জানেন, জেনারেল ইবরাহিম পার্লামেন্টে গেলে বা না গেলে তার রেপুটেশনে কোনো তফাৎ হবে না।'

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারুকুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রেসিডেন্ট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) অতিরিক্ত মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদসহ অনেকে।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda acquitted from Zia Orphanage Trust graft case

Following the judgement, there is no legal bar for Khaleda Zia to contest the general elections

1h ago