দুএক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল: প্রধানমন্ত্রী

দুএক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দুএক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, 'অনেকে নির্বাচনে আসতে চায় না। আপনারাই বলেন, ৩০টা সিট যারা পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে আসার আকাঙ্ক্ষাই থাকবে না! নির্বাচন বানচাল করে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার বাংলাদেশের মানুষকে ভোগান্তি দেওয়া; এটাই তাদের চেষ্টা।'

আজ মঙ্গলবার সকালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ২৪টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামোর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী।

এদিন প্রধানমন্ত্রী ১১টি জেলা—টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, সিলেট ও মৌলভীবাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এখন আর এই বাংলাদেশ দেখে কেউ বলতে পারবে না যে, এই বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, বাংলাদেশ ক্ষুধা বা হাত পেতে চলার দেশ। না, আমরা এখন একটা মর্যাদাশীল দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের সেই মর্যাদাটা আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে পেরেছি, যেটা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে আমরা পেয়েছিলাম। আজকে আবার আমরা সেই জায়গায় এসেছি।'

উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সকলের সহযোগিতায় এত দ্রুত আমরা দেশকে উন্নত করতে পেরেছি। মাত্র তো ১৪ বছরে এই পরিবর্তন। এ দেশটাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।'

আওয়ামী লীগ তৃণমূল থেকে উন্নয়ন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে কেউ অবহেলিত থাকবে না এবং সবাই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে। আমাদের যে লক্ষ্য, সে লক্ষ্য স্থির করে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি বলেই ২১ সালের মধ্যে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার আমরা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি।

'এখন সামনে আমাদের ২০৪১, স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা অনেক সুবিধা পাব। আবার স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা আমরা পাব না। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সুবিধাগুলো নিয়ে কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব সেই পরিকল্পনা নিয়েই কিন্তু আমরা কাজ করে যাচ্ছি,' যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমাদের নির্বাচনও ঘনিয়ে এসেছে। হয়তো দুএক দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনের তারিখ-সময় ঘোষণা দেবে।'

এদিনের আয়োজনের কারণ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, '৯৬ সালে অনেকগুলো কাজ করেছিলাম। খুলনার রূপসা ব্রিজ থেকে শুরু করে ধরলা ব্রিজ কুড়িগ্রামে, দক্ষিণাঞ্চলে শিকারপুর-দুয়ারিকা-গাবখান ব্রিজ; এ রকম অনেক কাজ, তাছাড়া স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা সব কিছু যেগুলো করেছিলাম, তখন কিন্তু সব উদ্বোধন করতে পারিনি। অবশ্য পরবর্তী যে সরকার এসেছে, সরকার গঠন করার এক মাসের মধ্যেই সেই গাবখান ব্রিজ উদ্বোধন করার সময় শুনলাম খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিচ্ছে যে, এই সরকার কোনো কাজই করেনি-উন্নয়ন করেনি। মানে উনি এক মাসের মধ্যে একটা ব্রিজ করে ফেলেছেন। আমি জানি না...গাবখান ব্রিজ—বিশাল এক নদী, সেই নদীর ওপর ব্রিজ। এ রকমই আমাকে শুনতে হলো যে, আমরা কিছুই করিনি। এবার আমরা যেটুকু কাজ করেছি, সেটুকু আমরা উদ্বোধন করব। এটা হলো বাস্তবতা। সেই জন্য আজকের এই আয়োজন। যেগুলো করেছি, সেগুলো অন্তত করে দিয়ে যাই।

'তারপর যখন ইলেকশন হবে, জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয় আবার আসব। আর না দিলে আমার কোনো আপসোস থাকবে না। কারণ আমি তো দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়ে এসেছি। এটুকু তো করতে পেরেছি!' বলেন তিনি।

জনগণের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'কাজেই জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। অনেকে নির্বাচনে আসতে চায় না। আপনারাই বলেন, ৩০টা সিট যারা পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে আসার আকাঙ্ক্ষাই থাকবে না! নির্বাচন বানচাল করে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার বাংলাদেশের মানুষকে ভোগান্তি দেওয়া; এটাই তাদের চেষ্টা।

'আমি জানি, এ দেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, উন্নয়নটা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় আবার এই অবরোধ আর অগ্নি সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও, আগুন দাও—বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা যেখানে ফাইনাল পরীক্ষা দেবে, পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট করছে। যেখানে বিএনপির আমলে মাত্র ৪৫ ভাগ ছিল স্বাক্ষরতার হার, আজকে আমরা ৭৬ দশমিক ছয় ভাগে উন্নীত করেছি। আজকে সমস্ত ছেলে-মেয়ে; ৯৮ ভাগ ছেলে-মেয়ে কিন্তু প্রাইমারি স্কুলে যায়। মেয়েরা পর্যন্ত স্কুলে যাচ্ছে। সেই সব কিছু আজকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে,' বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমি এটুকু বলবো যে, ওদের সুমতি হোক। এই ধ্বংসযজ্ঞ তারা বন্ধ করুক। অগ্নি সন্ত্রাস বন্ধ করুক এবং দেশবাসীকে বলবো, এই অগ্নি সন্ত্রাস আপনাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। কারণ সকলেরই জানমাল আছে। যারা ২০১৩-১৪তে অগ্নিদগ্ধ, তাদের যে কষ্ট-ভোগান্তি, সেটা তো আমরা দেখি। কাজেই এই ভোগান্তি যাতে আর মানুষের না হয়।'
 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago