ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন: ‘কিছু’ অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। ছবি: স্টার

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে ওঠা অনিয়মের 'কিছু' সত্যতা পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কর্মকর্তা।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি জানায়, নির্বাচনে আশুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণে কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা গত ৮ ও ৯ নভেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোট কেন্দ্রের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করেন এবং একই সঙ্গে তারা বেশ কয়েকটি কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। কমিটির সদস্যরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সাক্ষ্য নেন।

তদন্তের দ্বিতীয় দিনে কমিটির সদস্যরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজুর নিজ গ্রাম আশুগঞ্জ উপজেলার বড়তল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালশহর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম জেলা প্রশাসনের পক্ষে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে নির্দেশ দেন। পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীনকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে, কমিশনের তদন্তে নিজের আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, আশুগঞ্জের সাতটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। শরীফপুর কেন্দ্রে ব্যালটে সিল মারার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই যারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করে কোনো লাভ হবে না। তিনি এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও পরবর্তীতে পাওয়া ভিডিওগুলো আমলে নিয়ে তদন্ত করেছি। তদন্ত কাজ শেষ। যেকোনো সময় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, উপনির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে গত ৭ নভেম্বর বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। ইসির নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা চিঠিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

ভোটের দিন দুপুরে নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ভোট কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনা দ্য ডেইলি স্টারের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তখন সামাজিক মাধ্যমেও এরকম ভিডিও ভাইরাল হয়।

Comments

The Daily Star  | English

BNP's name being misused for personal gains: Rizvi

He urges party men to remain vigilant against committing misdeeds

1h ago