যাত্রী এক জন, সকাল থেকে গাবতলী ছেড়ে যায়নি কোনো বাস

নওগাঁ যাওয়ার জন্য গাবতরী বাস টার্মিনালে আসেন দেলোয়ার হোসেন। ছবি: স্টার

জরুরি প্রয়োজনে নওগাঁর সাপাহারে যেতে হবে যাত্রাবাড়ীর দেলোয়ার হোসেনকে (২৪)। কিন্তু সকাল ৮টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা গাবতলী বাস টার্মিনালের কাউন্টারে কাউন্টারে ঘুরেও একটা বাসে উঠতে পারেননি তিনি।

'যাত্রাবাড়ী থেকে সেই সকালে এসেছি। খালার জরুরি অপারেশন। কিছু টাকা পয়সা জোগার করতে হয়েছে তাই নিয়ে আজকে যে কোনো উপায়ে যেতে হবে। কিন্তু কোনো বাসই তো ছাড়ছে না, সবাই বলছে একজন যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়া যাবে না। সেই সকাল থেকে এক কাউন্টার থেকে আরেক কাউন্টারে দৌঁড়াচ্ছি কিন্তু সবাই বলছে আমি একলা ছাড়া আর কোনো যাত্রী নাই। কিন্তু আমার যাওয়াটা তো খুব দরকার,' দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন দেলোয়ার।

বিএনপির নতুন করে ডাকা দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন আজ রোববার গাবতলী ঘুরে দেখা যায় বাস টার্মিনালে কাউন্টার খুলে বসে থাকলেও সকাল থেকে কোনো বাস টার্মিনাল ছেড়ে যায়নি।

গত শুক্রবার বিকেলে গাবতলী বাস টার্মিনালে এক সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যাত্রী কম থাকলেও যে কোনো মূল্যে বাস ছাড়ার কথা বলেছিলেন। সরকার সবধরনের নিরাপত্তা দেবে বলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের জানিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু তারপরও আজকে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় বাস টার্মিনালে শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার প্রভাত রায়ের সাথে।  

তিনি বলেন, প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাস রাখা হয়েছে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ছাড়ব কীভাবে যাত্রী না থাকলে। মন্ত্রী বলেছেন আমরা জানি কিন্তু ৫-১০ জন যাত্রী তো পেতে হবে। যাত্রীই তো পাচ্ছি না। সকাল থেকে কোনো যাত্রী নেই।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে দায়িত্বরত কর্মী বলেন, আজকে কোনো যাত্রীই নাই। এতদিন তাও কিছু যাত্রী ছিল। আজকে সকাল থেকে কোনো যাত্রী নাই।

জানতে চাই এই যে টার্মিনালে যারা ঘুরছে এরা কারা—তিনি বলেন, এরা বেশিরভাগ সাংবাদিক এবং আমাদের টার্মিনালের লোকজন।

কথা হয় আরও কয়েকটি টার্মিনালের কর্মীদের সঙ্গে তারা জানান, যাত্রী নাই তাই বাস ছাড়তে পারছি না। কিন্তু আমাদের ওপর কাউন্টার খোলা রাখার চাপ আছে তাই আমরা বসেছি। কিন্তু যাত্রী না থাকলে বাস ছাড়ি কেমন করে।

সকাল ১১টার দিকে পর্যন্ত যাত্রী খরা দেখা যায় গাবতলীতে। এ সময়ের মধ্যে অনেকেই নওগাঁ যাত্রী দেলোয়ারকে যাত্রাপথ ভেঙ্গে ভেঙ্গে গন্তব্যে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

17h ago