পুলিশের ধাওয়ায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ

কুমিল্লা
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

পুলিশের ধাওয়ায় কুমিল্লার বুড়িচংয়ে মোকাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল রোববার ভোররাতে উপজেলার মোকাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মো. জাকির হোসেন (৪০)। তিনি উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি।

নিহতের পরিবার জানায়, রোববার রাত ৪টা ১০ মিনিটে একদল পুলিশ জাকিরের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করে। পরে ভোরের দিকে বাড়ির কাছে জাকিরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জাকিরের স্ত্রী আকলিমা বেগম বলেন, 'গত ৪ রাত ধরে আমার স্বামী পুলিশের ভয়ে তার নিজ ঘরে থাকতো না। এর আগে তিনি ২ বার স্ট্রোক করেছিলেন। আমার ২টি সন্তান আছে, এদের বড় করাই আমার কাছে বড় বিষয়।'

পরিবার জানায়, একান্নবর্তী বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জাকির অন্য ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ জাকিরকে ধরতে ধাওয়া করে।

জাকির হোসেনের ভাতিজা মামুন বলেন, 'অনেকক্ষণ ঘরে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিল জাকিরকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।'

জাকির হোসেনের বড় ভাই সহিদুল ইসলাম বলেন, 'ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে বাড়ির অদূরে জাকিরকে পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। এসময়ে জাকিরের দেহ প্রতিবেশির কলাগাছের পাশে উপুড় হয়ে পড়েছিল। জাকিরকে উদ্ধার করে কাবিলা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।'

এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাড. শরিফুল ইসলাম বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করে আসছিল। রোববার রাতে পুলিশ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের জাকির হোসেনের বাড়িতে যায় এবং সকালে বাড়ির পাশে জাকিরের মরদেহ পাওয়া যায়।'

তিনি আরও বলেন, 'জাকিরের দুই হাতে হ্যান্ডকাপ পরানোর চিহ্ন ও মুখে দাগ আছে। পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হতে পারে। পরিবার ভয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে না।'

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খন্দকার বলেন, 'পুলিশ তার বাড়িতে গিয়েছিল। তবে তখন তাকে পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অন্য একটি মামলার বিষয়ে পুলিশ গিয়েছিল।' মামলা না থাকলে কেন পুলিশ বাড়িতে গিয়েছিল জিজ্ঞেস করলে এর কোনো উত্তর দেননি ওসি।

জাকির হোসেনের বড় ভাই সহিদুল ইসলাম ক্ষোভ নিয়ে বলেন, 'মামলা না থাকা সত্ত্বেও শুধু দলীয় পরিচয়ে আমার ভাইকে হয়রানি করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

2h ago