‘গাজায় এক টুকরো খাবারের জন্য একে অপরকে মারতে শুরু করবে’

দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে রান্না করা খাবার নিতে অভুক্ত ফিলিস্তিনিদের কাড়াকাড়ি। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। উপরন্তু গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। টানা ১৭ দিন ধরে খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় প্রায় ২৪ লাখ গাজাবাসী বর্তমানে অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছে।

আন্তর্জাতিক এইড সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টায় মিশরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ২১ অক্টোবর ২০টি এবং পরদিন ১৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। তবে এ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই 'অপ্রতুল' জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, গাজাবাসীর জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রয়োজন।

জাতিসংঘের এ কথার মধ্য দিয়ে গাজাবাসীর মানবিক বিপর্যয়ের কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। বাকিটা বিবিসিকে জানিয়েছেন গাজার বাসিন্দা এমাদ আবুয়াসি।

বিবিসি জানায়, এক বছরেরও কম সময় আগে যুক্তরাজ্যের ব্ল্যাকপুল থেকে গাজায় চলে যান এমাদ আবুয়াসি। বর্তমানে খান ইউনিস এলাকায় ভাইয়ের ফ্ল্যাটে পরিবারের অর্ধশতাধিক সদস্যের সঙ্গে বসবাস করছেন। স্ত্রী স্টেফানি ও চার সন্তানও তাদের সঙ্গে আছেন। 

ইসরায়েলের মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে খাবারের সন্ধানে বের হয়েছিলেন তিনি। তবে অনেক খুঁজে পাস্তা পেলেও কোথাও কোনো রুটি পাননি।

বিবিসিকে পাঠানো এক অডিও বার্তায় এমাদ আবুয়াসি বলেন, 'আমার ধারণা আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এক টুকরো খাবারের জন্য গাজার বাসিন্দারা একে অপরকে মারতে শুরু করবে।'

'আপনি একটু রুটি কিনতে যান, দেখবেন- এক ব্যাগ রুটির জন্য মানুষ একে অপরকে ছুরিকাঘাত করছে', যোগ করেন তিনি।

এদিকে গাজায় বিমান হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল। গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ ভোর হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন এলাকায় অনবরত বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তারা জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে গাজার চার শতাধিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের ভারী বোমা হামলায় ৭০৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। 

এতে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭৯১ জনে। যাদের মধ্যে দুই হাজার ৩৬০ জন শিশু।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

9h ago