টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ কমায় চট্টগ্রামে ‘গ্যাস সংকট’

চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গাড়িতে গ্যাস নিতে পারছেন না অনেক গাড়ি চালক। ২২ অক্টোবর ২০২৩। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ থাকছে না। রান্না ঘরের চুলা থেকে সিএনজি ফিলিং স্টেশন—সব জায়গাতেই গ্যাসের সংকট। গত দুদিন ধরে একই পরিস্থিতি।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সংকট আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে।

নগরীর টাইগারপাস ইন্ট্রাকো সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকার চালক মোহাম্মদ মানিক মিয়া বলেন, 'লাইনে দাড়িয়ে আছি সকাল ১১টা থেকে। গ্যাস পাচ্ছি না। এর আগে আরও দুটি ফিলিং স্টেশনে গিয়ে ফেরত এসেছি। সেগুলোরও একই অবস্থা। গতকাল শনিবারও গ্যাস নিতে বিড়ম্বনায় পড়েছি।'

আবাসিক এলাকাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ সকাল ৯টা থেকে থাকায় বাসিন্দাদের ভিড় করতে দেখা গেছে রেস্তোরাগুলোতে।

নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকার গৃহিণী শায়লা বিনতে হোসাইন বলেন, 'সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত লাইনে গ্যাস ছিল না। এরপর কিছুটা গ্যাস পেয়েছি।'

গ্যাস সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। চট্টগ্রামে চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। তাই আবাসিক গ্রাহক ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে সংকট বেশি দেখা দিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা ৩১২ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দুটি সার কারখানায় দেওয়া হচ্ছে ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩৭ মিলিয়ন ঘনফুট এবং সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বাকি গ্যাস আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের দেওয়া হচ্ছে।'

মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালে কর্তব্যরত পেট্রোবাংলার এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'এতদিন এলএনজি টার্মিনাল থেকে ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। শনিবার থেকে তা কমিয়ে ৬০০ মিলিয়নে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলাতেও গ্যাস সরবরাহ কমে যাবে।'

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'এলএনজি মজুদে কিছুটা সংকট আছে। পরবর্তী শিডিউলের সঙ্গে ব্যালেন্স করে এখন কিছুটা কমিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। তাই পিক আওয়ার সকাল ৯টা থেকে দুপুরে ২টা পর্যন্ত কিছুদিন সংকট থাকবে। আমরা লং টার্মে যে কার্গোগুলো আনি, সেগুলোর একটা নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। চাইলেই চুক্তির বাইরে বেশি গ্যাস আনা সম্ভব নয়। এ জন্য আমরা স্পট মার্কেট থেকেও গ্যাস কিনে থাকি।'

'সচরাচর প্রতি মাসে তিন বার স্পট মার্কেট থেকে কার্গো আসে। এ মাসে পেয়েছি মাত্র একটি কার্গো। আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরের জন্য পেয়েছি মাত্র একটি করে। এলএনজির আন্তর্জাতিক বাজার চড়া থাকায় আমরা সমন্বয় করে গ্যাস কিনছি,' যোগ করেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

2h ago