বিএনপির কথা এবং কাজ সবই ধ্বংসাত্মক: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির কথা এবং কাজ সবই ধ্বংসাত্মক: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপির কথা এবং কাজ সবই ধ্বংসাত্মক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ ব্যাপারে দেশবাসী সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে আয়োজিত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভার পাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিসির ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ময়মনসিংহের কেউট খালি ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, '২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? তারা দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করেছে? তারা দেশের কতটুকু উন্নতি করেছে, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার আদর্শ-পদাঙ্ক অনুসরণ আমরা করেছি। তার আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করেছি।'

তিনি বলেন, 'সারা বাংলাদেশে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত যতগুলো ব্রিজ, পুল ব্রিজ, রাস্তা-ঘাট আমরা করেছি সব হিসাব দিতে গেলে অনেক সময় লাগবে।'

এ সময় উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের বর্ণনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, '২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি, সেটা আমি বহুবার বলেছি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে; আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। তার পরে দেশটার অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি—অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তার আসে আর্মি ব্যাকড তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

'সেই সময়টার কথা একবার চিন্তা করে দেখেন মানুষের কী দুরাবস্থা ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো সুযোগ ছিল না। বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর, তারই ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। যা হোক একটা পর্যায়ে ২০০৮ সালে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, '২০০৮ এর নির্বাচনের রেজাল্ট; ২০ দলীয় ঐক্যজোট বিএনপি-জামায়াত পেয়েছিল মাত্র ২৯টি সিট। পরে বোধ হয় রিইলেকশনে একটা—৩০টা। ৩০০ সিটের মধ্যে তাদের প্রাপ্তি ছিল মাত্র ৩০টি সিট। এই হলো তাদের শক্তি, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা।

'এখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন; নানা কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না কারণ অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই কিন্তু এদের কথা এবং এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকে এই উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না,' যোগ করেন তিনি।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নি সন্ত্রাসের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল বা মারা গিয়েছিল আমরা কিন্তু প্রত্যেককে প্রায় তিন হাজার ৮০০ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলাম। আর যারা অগ্নিদগ্ধ তাদের এখনো চিকিৎসা বা যা প্রয়োজন হচ্ছে আমরা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেন এই ধরনের অগ্নি সন্ত্রাস বা এই ধরনের ঘটনা আর না আসে। তখন তারা এগুলো করেছে। এখন তারা আন্দোলন করছে ঠিক আছে, যদি দেখি এখনো তারা চেষ্টা করে বাসে আগুন দিতে, গাড়িতে আগুন দিতে—আমি বলে দিয়েছি, এই আগুন যারা দিতে যাবে; এখন সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তায় যারা থাকবে বা গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে বলেছি, সবার ক্যামেরা অন থাকবে, যদি কেউ এ রকম করতে চায় সঙ্গে সঙ্গে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। আবার ওই অগ্নি সন্ত্রাসে যেতে পারে। আন্দোলন করুক আমার আপত্তি নাই।

'আমরা তো সারা জীবন আন্দোলন করে তার পরে না ক্ষমতায় এসেছি। তারা যেতে চাচ্ছে কিন্তু এই ধরনের মানুষের ক্ষতি করা, এটা যেন করতে না পারে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন,' বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'শুনলাম আমাদের বিএনপি, আমি বিরোধী দল বলবো না ওদেরকে কারণ পার্লামেন্টারি সিস্টেমে বিরোধী দল তারাই হয় যাদের পার্লামেন্টে মেম্বারশিপ আছে এবং বিরোধী দলে যারা মেম্বার বেশি পায় তারাই বিরোধী দল গঠন করতে পারে। বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। মানুষ খুন করার দল। কাজেই তারা প্রতিদিনই আমাদের পদত্যাগও চায় আর আন্দোলন করে হটিয়ে দেবে।

'ঠিক আছে, তারা তাদের আন্দোলন করতে থাকুক। আমার আছে জনগণ, আমার তো আর কিছু নেই! বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি, হারাবারও কিছু নাই কিন্তু আমার একটাই লক্ষ্য দেশের মানুষের কল্যাণ করা। মানুষের মঙ্গল করা, সেটাই আমরা করে যাচ্ছি,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Large budget looms amid high inflation

The government has planned a Tk 8.48 lakh crore budget for the next fiscal year, up 6.3 percent from this year’s budget, as it looks to usher in a period of moderate growth and low inflation.

8h ago