বিকল্প ব্যবস্থায় রাশিয়ায় রপ্তানি বেড়েছে

তৈরি পোশাক
বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় তৈরি পোশাকের চালান অব্যাহত আছে। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

আশঙ্কা করা হয়েছিল যে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ায় তৈরি পোশাকের চালান স্থবির হয়ে পড়বে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চালান প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে সময় রাশিয়াগামী অনেক জাহাজকে চট্টগ্রাম বন্দরে 'গ্রিন সিগন্যাল'র জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

তবে শেষ পর্যন্ত বিকল্প পথে তথা পোল্যান্ড ও জার্মানির হামবুর্গের মাধ্যমে চালানগুলো চালু রাখা সম্ভব হয়।

দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো রাশিয়ার খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে থাকায় বিকল্প পথে রপ্তানি বন্ধ হয়নি।

সাগর পথে সরাসরি বাণিজ্য ছাড়াও, ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার প্রধান ব্যাংকগুলোর ওপর আর্থিক লেনদেনের ডিজিটাল প্রক্রিয়া 'সুইফট' ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় পোশাক রপ্তানিকারকরা অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন।

পশ্চিমের প্রায় সব পোশাক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ড যুদ্ধের প্রতিবাদে রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা সরিয়ে নিয়েছে।

তবে এখন প্রায় সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় তৈরি পোশাকের চালান অব্যাহত আছে।

দেশের রপ্তানিকারকরা চীনা মুদ্রা ইউয়ানে অর্থ গ্রহণ করছেন। কিছু ক্ষেত্রে রুশ আমদানিকারকরা তুরস্ক, জার্মানি ও অন্যান্য প্রতিবেশীসহ তৃতীয় দেশ থেকে ডলারে পরিশোধ করছেন।

এছাড়াও, অন্যতম উদীয়মান বাজার রাশিয়ায় পণ্য পাঠাতে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক ইউয়ানে পেমেন্ট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এটি চীন থেকে আমদানির জন্য অর্থ পরিশোধ সহজতর করবে।

পশ্চিমের তৈরি পোশাক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়ার থেকে চলে যাওয়ায় এবং যুদ্ধের কারণে রুশ অর্থনীতি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত করেছেন।

ফলে, রাশিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় যুদ্ধের আগের সময়ের মতোই স্বাভাবিক দেখা যাচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ২৩ লাখ ডলারে।

এতে আরও জানা যায়, এসব পণ্যের মধ্যে ওভেন গার্মেন্টসের চালান ৪৮ শতাংশ বেড়ে এক কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার ও নিটওয়্যার ৪৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে দুই কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউয়ানে অর্থ গ্রহণের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা যুদ্ধের সময়ও রাশিয়ায় রপ্তানি পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে।'

তিনি আরও বলেন, 'রাশিয়ার বাজারে স্থানীয়ভাবে তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। কারণ যুদ্ধের কারণে সে দেশের অর্থনীতি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।'

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিকল্প পথে অনেকেই রাশিয়ায় পণ্য পরিবহন করায় সে দেশে রপ্তানি বাড়ছে।'

তার মতে, সাধারণত যুদ্ধে লিপ্ত কোনো দেশে রপ্তানি বাড়ে না।

Comments

The Daily Star  | English

Cops use water cannons to disperse protesting dismissed BDR members in Kakrail

Police barred them when they were marching towards the chief adviser’s residence, Jamuna

39m ago