মালদ্বীপে এক প্রবাসীর হাতে আরেক প্রবাসী অপহৃত, সাড়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

জলিল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

মালদ্বীপ প্রবাসী টাঙ্গাইলের জলিল মিয়াকে অপহরণের ৫ দিন পর বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থানীয় নাগরিকদের সহায়তায় উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।

মালদ্বীপের স্থানীয় একটি পত্রিকার বরাতে জানা যায়, জলিলকে অপহরণের সঙ্গে জড়িতরা সবাই প্রবাসী বাংলাদেশি। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

জলিলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি তিলাফুশি আইল্যান্ডে একটি প্রাইভেট কোম্পানির চালক হিসেবে কর্মরত এবং পুরোনো মালামাল কিনে ব্যবসা করেন।

গত ৩ অক্টোবর জলিলকে মালদ্বীপের তিলাফুশি আইল্যান্ড থেকে অপহরণ করে রাজধানী মালেতে আটকে রাখা হয়।

এর দুদিন পর তার ফোন থেকে দেশে পরিবারের কাছে কল করে ৮ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। 

বিষয়টি জলিলের স্ত্রী মালদ্বীপে অবস্থানরত তাদের আত্মীয় রাকিবকে জানান। রাকিব তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মালদ্বীপ পুলিশকে অবহিত করেন। 

কিন্তু এর মধ্যেই জলিলকে নির্যাতন থেকে বাঁচাতে তার পরিবার অনলাইনে অপহরণকারীদের কাছে ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। 

এ ছাড়া জলিলের এলাকার বাসিন্দা ও মালদ্বীপ প্রবাসী রুবেলের কাছ থেকে অপহরণকারীরা ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে জানা গেছে।

রাকিব জানান, জলিলকে অপহরণের পর তার ফোন থেকে কল করে টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। কিন্তু তিনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে অপর প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেয়। পরে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মালদ্বীপ পুলিশের সহযোগিতায় ৫ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়।

জলিলকে তার কোম্পানির সহযোগিতায় দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরেক প্রবাসী রুবেল জানান, তার কাছ থেকেও ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অপহরণকারীরা। জলিলের ফোন থেকে কল করে তাকে জানানো হয় যে জলিল মিয়া অ্যাকসিডেন্ট করেছেন। তার চিকিৎসায় জরুরি টাকা লাগবে। 

তিনি তখন অপহরণকারীদের ৬ লাখ টাকা পাঠান।

এ বিষয়ে মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর মো. সোহেল পারভেজ বলেন, 'বিষয়টি জানার পরপরই আমরা মালদ্বীপ পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করি।' 

এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে যুক্ত না হওয়ার জন্য মালদ্বীপে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্তক করেন তিনি।

জলিল মিয়ার বড় মেয়ে জুলি আক্তার জানান, তার বাবা ২০১৬ সালে মালদ্বীপে যান। তিনি চাকরির পাশাপাশি ব্যবসাও করতেন। সেখানে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মো. আরিফ মিয়ার সঙ্গে তার বাবার পরিচয় হয়।  

জুলির দাবি, তার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন আরিফ মিয়া। ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় তার বাবাকে অপহরণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, আরিফ তার বাবাকে মালে যেতে বলেন। মালে পৌঁছার পরই তার বাবাকে একটি রুমে নিয়ে হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। সেখানে মোট ৬ জন থাকলেও, আরিফ ছাড়া কাউকে চিনতে পারেননি জলিল।

জুলি আক্তার বলেন, 'দুদিন পর বাবার নম্বর থেকে কল করে ৮ লাখ টাকা দিতে বলে, না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর তারা দুটি বিকাশ নম্বর পাঠায়। দুটি নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর হলে তারা বাকি টাকা বাবার আরেক বন্ধুর কাছ থেকে নেবে বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।'

তিনি আরও জানান, তারা সখীপুর থানায় এ ঘটনায় জিডি করতে চাইলে দায়িত্বরত অফিসার অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে যে দুটি নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়, তার বিপরীতে জিডি করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Leading univs withdrawing from cluster system

Session delays, irregularities, and lack of central planning cited as reasons

11h ago