দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন, বিটিআরসি, ইন্টারনেট, রবি আজিয়াটা, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক,
স্টার ফাইল ফটো

চলতি বছরের আগস্টে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ১৯ লাখে।

এর আগে, জুলাইয়ে প্রথমবার ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ছাড়িয়ে যায়। এ নিয়ে ফেব্রুয়ারির পর থেকে টানা সাত মাস ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলো।

গত ফেব্রুয়ারিতে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ছয় মাস পর ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে শুরু করে, যা আগস্টেও অব্যাহত আছে।

এরপর মার্চ ও জুনে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেড়েছিল এবং ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে।

বর্তমানে দেশের মোট ইন্টারনেট গ্রাহকের ৯০ দশমিক ৭৯ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯৭ লাখ।

বিভিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর কর্মকর্তারা এই বৃদ্ধির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরেও ডিজিটাল সেবার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাকে কারণ হিসেবে দেখছেন।

তারা বলেন, এই প্রবৃদ্ধি ভোক্তাদের বিভিন্ন ধরণের পরিষেবার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতার প্রতিফলন।

বাংলালিংকের সিইও এরিক অস সম্প্রতি বলেন, বাংলালিংক ধারাবাহিকভাবে নেটওয়ার্কের গুণগত মানকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। টানা সপ্তম ওকলা স্পিডটেস্ট অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাইবিএল সুপার অ্যাপ ও টফির মাধ্যমে সেরা মোবাইল টেলিযোগাযোগ সেবা এবং ওয়ান স্টপ ডিজিটাল সলিউশন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে আমরা দ্রুততম ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে চাই।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বলেন, গ্রাহক আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। গ্রাহকরা ওভার-দ্য টপ মিডিয়া ও গেমিংসহ বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল পরিষেবার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।

'এই পরিবর্তনের ফলে গ্রাহক সংখ্যার উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ হয়েছে। এর আগে, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রাথমিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউবের জন্য আমাদের পরিষেবা ব্যবহার করত, তবে এখন তাদের পছন্দ ডিজিটাল অফারগুলোর বিস্তৃত স্পেকট্রামের দিকে প্রসারিত হয়েছে,' বলেন তিনি।

গ্রামীণফোন সম্প্রতি জানিয়েছে, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও স্পেকট্রাম রোলআউটের দিকে অব্যাহতভাবে গুরুত্ব দেওয়ায় ডিজিটালকেন্দ্রিক সেবার মাধ্যমে গ্রাহকের চাহিদা পূরণে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তারা।

অবশ্য আগস্টে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকে সংখ্যা অপরিবর্তিত আছে ১ কোটি ২১ লাখে।

বিটিআরসি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকের তথ্য সরবরাহ করায় গ্রাহক বেড়েছে নাকি কমেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিটিআরসি প্রায় সব ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাজার বিশ্লেষণ, পরামর্শ ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের তথ্য হিসাব করে থাকে।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, সম্প্রতি ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি থমকে আছে। এছাড়া ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম বেড়েছে, কারণ এই শিল্পকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় অনেকে ইন্টারনেট ব্যয় কমিয়েছেন।'

তবে, অনেকেই একাধিক সিম ব্যবহার করায় বিটিআরসির ডাটা দিয়ে কতজন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তা নির্ধারণ করা যায় না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পাঁচ বছরের বেশি বয়সী ৪১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

Comments

The Daily Star  | English

US at war with Iran's nuclear programme, not Iran: JD Vance

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

12h ago