বিশ্বকাপের মধ্যে দেখে ফেলুন ক্রিকেট বিষয়ক এই ৫ সিনেমা
ক্রিকেটের জগতটা শুধুই খেলার সবুজ মাঠ আর স্টেডিয়ামভর্তি হৈ-হুল্লোড়ে বাঁধা নয়। পিচের বাইরেও রয়েছে ক্রিকেটের এমন একটি গল্পের দুনিয়া, যেখানে এই খেলাটিকে উদযাপন করা হয়, বারবার ভেঙে গড়া হয়।
বিশ্বজুড়ে এখন আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২৩ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। এ উপলক্ষে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য থাকছে ক্রিকেট সংক্রান্ত ৫টি সিনেমার খোঁজ।
লাগান: ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন ইন্ডিয়া (২০০১)
ক্রিকেট নিয়ে অনেক সিনেমাই তৈরি হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে খুব কম সিনেমাই পেরেছে 'লাগান: ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন ইন্ডিয়া'র মতো খেলা, নাটকীয়তা এবং অনুপ্রেরণার এমন নিখুঁত মিশেল উপহার দিতে।
সিনেমার প্লট একটি ছোট্ট গ্রামকে ঘিরে, যেখানকার অধিবাসীরা ভূমিকর বা লাগানের চাপে নিপীড়িত। এই কর তাদের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসকরা। এখানেই আবির্ভাব ঘটে আমির খান অভিনীত ভুবন চরিত্রটির। তরুণ ও অদম্য মানসিকতার ভুবন ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে গ্রামবাসীদের নিয়ে বিদ্রোহ গড়ে তোলে।
লাগান সিনেমাটিকে বিশেষ করে তুলেছে মুক্তির প্রতীক হিসেবে বুদ্ধিদীপ্তভাবে ক্রিকেটের ব্যবহার। ক্রিকেট, যে খেলা ব্রিটিশদেরই প্রচলন করা, সেটিই তাদের বিরুদ্ধে একতা ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। বিদ্রোহ ও অদম্য মানবশক্তির অনুরণনে যেন বিশ্বজোড়া দর্শকদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে যায় এই সিনেমার মাধ্যমে।
ওয়ান্ড্রাস অবলিভিয়ন (২০০৩)
ক্রিকেটের মধ্যে বিচিত্র সব চরিত্রকে একই আগ্রহের জায়গা থেকে বিভক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে। ওয়ান্ড্রাস অবলিভিয়নের মতো উষ্ণ আবেগের সিনেমাও আমাদের এই শিক্ষাই দেয়। এ সিনেমার কাহিনী ডেভিড ওয়াইজম্যান নামের এক ১১ বছর ইহুদী বালক ও স্থানীয় ক্রিকেট দলে তার যোগদানের স্বপ্ন নিয়ে। ক্রিকেটের জন্য তার একাগ্রতার ফলে ঘটনার ধারাবাহিকতায় তার বন্ধুত্ব হয় এক জ্যামাইকান অভিবাসী ডেনিস স্যামুয়েলসের সঙ্গে।
তাদের মধ্যকার সাংস্কৃতিক ও জাতিগত শ্রেণিবিভক্তিকে অতিক্রম করে গড়ে উঠা বন্ধন আমাদের দেখায়, বন্ধুত্ব ও একই বিষয়ে আগ্রহ বিশাল সব ফারাকও ঘুচিয়ে দিতে পারে।
ইকবাল (২০০৫)
সবার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি সবসময় সমান থাকে না এবং সবাই একই রকম সক্ষমতা নিয়েও জন্মায় না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে — আমাদের কাছে ইতোমধ্যেই যা আছে, তা কাজে লাগিয়ে আমরা কী করছি?
ইকবাল একটি ভারতীয় স্পোর্টস ড্রামা ঘরানার সিনেমা, যেখানে এক মূক ও বধির তরুণের পেশাদার ক্রিকেটার হয়ে ওঠার স্বপ্ন আর সেই স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অনুপ্রেরণার কাহিনী চিত্রায়িত হয়েছে। এই মন ভালো করে দেওয়া আর মনে চিন্তার উদ্রেক ঘটানো সিনেমাটি শুধু দর্শকদেরকে আবেগী গল্পতেই বন্দি করে না, জীবনমুখী বেশকিছু শিক্ষাও দেয়।
প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ইকবাল ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। সামাজিক বাধা-বিপত্তিকে অমান্য করে শুধু দৃঢ় সংকল্প সঙ্গে করেই সে তার স্বপ্নের পিছু ছুটে যায়। যা দর্শক হিসেবে আমাদেরকেও মনে করিয়ে দেয়, নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা যায়।
এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি (২০১৬)
হাজারো ক্রিকেটপ্রেমীর হৃদয় জুড়ে যার বিচরণ, তার নাম ধোনি। খেলার ইতিহাসে সবচেয়ে আইকনিক ক্রিকেটারদের একজন মাহেন্দ্র সিং ধোনির জীবনকাহিনী অবলম্বনে এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে।
এই সিনেমায় ছোট শহরের এক তরুণ থেকে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন হয়ে উঠায় ধোনির সামগ্রিক যাত্রা তুলে ধরা হয়েছে। তার জীবনের গল্প থেকে এটুকু অবশ্যই প্রমাণ হয়, চাইলেই সাধারণ শুরু থেকেও অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে নিজের স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাওয়া যায়।
সাচিন: অ্যা বিলিয়ন ড্রিমস (২০১৭)
ক্রিকেট নিয়ে সিনেমার কোনো তালিকাই ক্রিকেটের কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকারের নাম ছাড়া সম্পূর্ণ হওয়ার নয়। জেমস আরস্কাইন পরিচালিত 'সাচিন: অ্যা বিলিয়ন ড্রিমস' সিনেমাটি ক্রীড়াবিশ্বের এই অগ্রদূতের যাত্রা নিয়ে।
রিয়েল ফুটেজ, কিছু নতুন শ্যুট করা ভিডিও এবং ব্যক্তিগত গল্পের সমন্বয়ে এই সিনেমাটি শচীনের শৈশব, তারকা হয়ে উঠা এবং তার ক্যারিয়ারের আবেগী সব মুহূর্তের কথা বলে।
অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments