বিনোদন পার্কগুলোর বার্ষিক আয় ৫ হাজার কোটি টাকা

বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক, থিম পার্ক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজমেন্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্র্যাকশনস, বিএএপিএ,

দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হওয়ায় বিনোদন পার্কগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে, বাংলাদেশের বিনোদন ও থিম পার্ক খাতে বিনিয়োগও বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা দ্রুত বর্ধনশীল এই শিল্পে অর্থ বিনিয়োগ করছেন।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজমেন্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্র্যাকশনসের (বিএএপিএ) তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দশকে এ খাতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং প্রায় ৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।

কনকর্ড গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা অনুপ কুমার সরকার বলেন, 'ব্যবসায়ীরা এ খাতের সম্ভাবনার ২০ শতাংশও কাজে লাগাতে পারেননি। এখানে ভালো ব্যবসা করার বিশাল সম্ভাবনা আছে, এই সম্ভাবনা কাজে লাগানো উচিত।'

গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'পর্যটন উন্নয়নে বিনোদন পার্কের ভূমিকা'  শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

কনকর্ড গ্রুপ অব কোম্পানিজের কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে ফ্যান্টাসি কিংডম ও ফয়স লেক পরিচালনা করে।

গতকাল থেকে শুরু হওয়া 'বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল' শীর্ষক চার দিনব্যাপী পর্যটন মেলার অংশ হিসেবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

১৯৭৯ সালে সরকার রাজধানীর শাহবাগে শিশু পার্ক স্থাপন করে, যেটি বাংলাদেশে প্রথম পার্ক। ছয় বছর পর শ্যামলীর শিশুমেলা পার্ক চালু হয়।

১৯৯০ সালে গুলশানে স্থাপিত ওয়ান্ডারল্যান্ড বিনোদন পার্কটি ছিল দেশের প্রথম বেসরকারি খাতের পার্ক। অবশ্য প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর সরকারি জমিতে নির্মাণের কারণে এটি ভেঙে ফেলা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে তিন শতাধিক বিনোদন ও থিম পার্ক রয়েছে। এর মধ্যে ১০০টিরও বেশি পার্ক বিএএপিএর সদস্য। এ খাতের বার্ষিক আয় ৫ হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছে বাণিজ্য সংগঠনটি।

সংগঠনটির সদস্যদের মালিকানাধীন পার্কগুলোতে বছরে ৬ কোটি মানুষ ঘুরতে যায়, যার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটক।

নতুন সুযোগ-সুবিধা চালু ও সেবার মান উন্নত হলে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

সেমিনারে অনুপ কুমার সরকার বলেন, 'আপনাকে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। না হলে দর্শনার্থীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে উঠবে। যেকোনো পার্ক ও পর্যটন স্পটের জন্য নিরাপত্তা ও সড়ক যোগাযোগ প্রধান উদ্বেগের বিষয়।'

টুরিস্ট পুলিশ যেন বিনোদন পার্কে সহায়তা করতে পারে ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি জানান, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। তাই মানুষে বিনোদনের ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী।

এজন্য সারাদেশে বিনোদন পার্ক গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় জমি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

নরসিংদীর মর্জাল ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের করপোরেট ম্যানেজার সোয়েব জামান বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ অনুযায়ী বিনোদন পার্ক একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সেবা শিল্প। তাই এ শিল্পে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বিনোদন পার্ক স্থাপনে সড়ক যোগাযোগ ও আশপাশের এলাকায় আবাসনসহ উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিনোদন পার্কগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। এই খাতের আরও উন্নয়নে একটি শক্তিশালী ভিত্তি প্রয়োজন।

তিনি ভাড়ায় টুরিস্ট বাস চালু, দক্ষ জনবল ও ক্রমবর্ধমান এই শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে নতুন গ্র্যাজুয়েটদের উৎসাহিত করার পরামর্শ দেন।

কেরানীগঞ্জের আনোয়ার সিটি ম্যাজিক আইল্যান্ডের ব্যবস্থাপক মাহবুবুল হাসান জানান, তারা যখন পার্কটি চালু করেন তখন আয়তন ছিল ১০০ একর। এখন পার্কের আয়তন ৩০০ একর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই বেশ কিছু নতুন ফিচার যোগ করা হবে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক জাবেদ আহমেদ বলেন, বিনোদন পার্কগুলোকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে উন্নীত করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Public admin reforms: Cluster system may be proposed for ministries

The Public Administration Reform Commission is likely to recommend reducing the number of ministries and divisions to 30 from 55 to improve coordination and slash the government’s operational cost.

6h ago