রুশ নৌকমান্ডার হত্যার দাবির পরের দিন তার ভিডিও প্রকাশ
কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার রুশ নৌকমান্ডার হত্যার দাবির পরের দিন তার ভিডিও প্রকাশ অ্যাডমিরাল ভিক্টর সোকোলভের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রাশিয়া। রুশ রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ভিডিও কলের মাধ্যমে রাশিয়া প্রতিরক্ষা বাহিনীর নেতাদের এক বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সোকোলভকে হত্যার দাবি করার এক দিন পরই এলো এই ভিডিও।
গতকাল মঙ্গলবার রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা ছবি ও ভিডিওতে সোকোলভকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নিতে যায়। শৌইগুর সঙ্গে অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা সশরীরে দেখা করলেও সোকোলভসহ আরও কয়েকজন ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগ দেন। ভিডিওতে সোকোলভকে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি। এই ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয়েছে, সেটাও জানানো হয়নি।
সোমবার ইউক্রেনের 'স্পেশাল ফোর্স' তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানায়, 'রুশ কৃষ্ণ সাগর নৌবহরের সদর দপ্তরে চালানো হামলায় ৩৪ কর্মকর্তা নিহত হন, যাদের মধ্যে আছেন নৌবহরের রুশ কমান্ডার। আরও ১০৫ জন আহত হয়েছেন। সদর দপ্তরটি এমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে একে আর মেরামত করা সম্ভব হবে না।'
রাশিয়ার প্রকাশিত নতুন ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের স্পেশাল ফোর্স তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানায়, 'সোকোলভ জীবিত আছেন—রুশরা যেহেতু তা প্রমাণের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, তাই আমরাও আমাদের পক্ষ থেকে এই তথ্য আবারো যাচাই করছি।'
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ইউক্রেনের দাবির বিপরীতে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সাংবাদিকদের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সোকোলভের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকারও করেননি, আবার অস্বীকারও করেননি। তিনি জানান, সোকোলভের মৃত্যু হলে সেটা সংশ্লিষ্ট সবার জন্য ভালো খবর।
তিনি বলেন, 'তার ওখানে থাকারই কথা না (সেভাস্তোপলে), তিনি এখন আমাদের সাময়িকভাবে অধীগ্রহণকৃত অঞ্চলে আছেন।'
'সুতরাং, তিনি মারা যেয়ে থাকলে যারা আমাদের কাছ থেকে দখল করা অঞ্চল মুক্ত জন্য যারা কাজ করছেন, তাদের সবার জন্য এটি ভালো খবর', যোগ করেন তিনি।
ভিডিওতে শৌইগু দাবি করেন, সেপ্টেম্বরে ১৭ হাজারেরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন এবং মার্কিন ব্র্যাডলি ফাইটিং ভেহিকলসহ ২ হাজার ৭০০ সামরিক উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে।
রয়টার্স যুদ্ধক্ষেত্রের এসব তথ্য যাচাই করতে পারেনি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে-কমিয়ে বলার প্রবণতা দেখিয়েছে উভয় পক্ষ।
'যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে অস্ত্র দেওয়া অব্যাহত রেখেছে আর কিয়েভ প্রশাসন অপ্রশিক্ষিত সেনাদের কাণ্ডজ্ঞানহীন হামলার মাধ্যমে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে', যোগ করেন শৌইগু।
শৌইগু দাবি করেন, ইউক্রেনের পালটা হামলা এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য ফল পায়নি।
এখন পর্যন্ত রুশ বাহিনী ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভূখণ্ডের ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ দখল করেছে। জুলাই থেকে পালটা হামলা শুরু করলেও খুব বেশি পরিমাণ ভূখণ্ড ফিরিয়ে নিতে পারেনি ইউক্রেন।
Comments