জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

জি ২০ সম্মেলন
ছবি: বাসস থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকালে ভারতের রাজধানীতে বিশ্বের ২০ সদস্যের প্রধান অর্থনৈতিক গ্রুপের নেতাদের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া 'জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে' যোগ দিয়েছেন।

এর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্মেলন স্থলে পৌঁছালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে স্বাগত জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা প্রগতি ময়দানের ভারত মান্দাপাম কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠেয় এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

প্রগতি ময়দানে ভারত মান্দাপাম কনভেনশন সেন্টারে ১৮ তম এই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের মধ্যে সারা বছর ধরে অনুষ্ঠিত সকল জি-২০ প্রক্রিয়া এবং বৈঠকের চূড়ান্ত পরিণতি হতে চলেছে।

শীর্ষ সম্মেলনে জি-২০ নেতারা অন্যান্যের মধ্যে ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু অর্থায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস), খাদ্য নিরাপত্তা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধান খুঁজে বের করবেন।

নয়াদিল্লিতে এই অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিশ্ব নেতারা হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়া, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা প্রমুখ।

'এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত' শীর্ষ সম্মেলনের এই মূল প্রতিপাদ্যের অধীনে শেখ হাসিনার বিভিন্ন অধিবেশনে যোগদান এবং দুটি ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।

'এক বিশ্ব' এবং 'এক পরিবার' অধিবেশন চলাকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, কভিড-১৯ মহামাইর পরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি, খাদ্য ও সারের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর বৈশ্বিক সরবরাহের মারাত্মক ব্যাঘাতের মতো চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা তুলে ধরবেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতাও অংশগ্রহণকারী বিশ্ব নেতাদের কাছে তুলে ধরবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছে এবং এই মেয়াদকালে ভারত বাংলাদেশসহ মোট নয়টি দেশকে জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

আমন্ত্রিত দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে জি-২০ নেতাদের ঘোষণা গৃহীত হবে যেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচনা করা এবং সম্মত হওয়া অগ্রাধিকারগুলোর প্রতি নেতাদের প্রতিশ্রুতি উল্লেখ থাকবে।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম গ্রুপ অফ টুয়েন্টি (জি-২০)। এটি সকল প্রধান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে বৈশ্বিক নির্মাণ এবং শাসন গঠন ও শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জি-২০ ১৯৯৯ সালে এশিয়ান আর্থিক সংকটের পর অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্র্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ফোরাম হিসেবে গঠিত হয়েছিল।

জি-২০ ১৯টি দেশ নিয়ে গঠিত (আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

জি-২০ সদস্যরা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের বেশি এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

15h ago