বরখাস্ত ডিএজি এমরান মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরেছেন

ছবি: সংগৃহীত

পরিবার নিয়ে মার্কিন দূতাবাসে 'আশ্রয় চাইতে' গিয়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর বাসায় ফিরে গেছেন বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া।

আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্ত্রী ও ৩ মেয়েকে নিয়ে পুলিশের সহায়তায় রাত ৯টার দিকে আমি বাসায় ফিরেছি। আমরা বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাসের অফিস চত্বরে অবস্থান করেছিলাম।'

এমরান আহমেদ বলেন, 'সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে ভয় না পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমি ভিসা পেতে মার্কিন দূতাবাসে যাইনি। হুমকি পাওয়ায় সেখানে গিয়েছিলাম।'

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিএজি এমরান ব্যক্তিগত কারণে মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন। পরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন।'

এর আগে, দ্য ডেইলি স্টারকে এক ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসে অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন এমরান আহমেদ।

ক্ষুদেবার্তায় তিনি বলেন, 'আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে ........। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবত অনবরত হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।'

যোগাযোগ করা হলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই মুহূর্তে আমাদের কাছে জানানোর মতো কোনো তথ্য নেই।'

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি পাঠান ১০৪ জন নোবেল বিজয়ীসহ বিশ্বের ১৭৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি। ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ৪ সেপ্টেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, 'অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে সই করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে সই করব না।'

পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

পরে ওইদিনই অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'অত্র অফিসের সকল বিজ্ঞ আইন কর্মকর্তাকে সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অফিস সংক্রান্ত কোন বিষয়ে কোনো প্রকার বক্তব্য প্রদানের পূর্বে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয়ের সাথে পরামর্শ ও পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে বক্তব্য প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয় অনুরোধ করা হলো।'

এরপর আজ আইনমন্ত্রী জানান, ডিএজি এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকালই আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার ১৯৭২-এর ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগাদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাকে ডেপুটি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।'

 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

5h ago