লো প্রেশারে কী খাবেন

ছবি: সংগৃহীত

নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেশারে খুবই পরিচিত একটি শব্দ। এটির আরেকটি নাম হাইপোটেনশন। হাই ব্লাড প্রেশার যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনই লো ব্লাড প্রেশারও ক্ষতির কারণ হতে পারে।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার তারেক আহমেদ চৌধুরীর কাছ থেকে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।

লো ব্লাড প্রেশার কী

মানবদেহের রক্তচাপ স্বাভাবিক রক্তচাপের চেয়ে কমে গেলে সেটাকে লো ব্লাড প্রেশার বলে। মানবদেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। এই চাপের মাত্রা  ৯০/৬০ মিলিমিটার মার্কারির নিচে চলে এলে লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ।

 

 

লো ব্লাড প্রেশারের কারণ ও লক্ষণ

ডাক্তার তারেক আহমেদ চৌধুরী জানান, লোপ্রেশার বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি উচ্চ রক্তচাপের মতো কোনো রোগ নয়। অনেকের প্রায় সময়ই রক্তচাপের মাত্রা কম থাকে। এটা হতে পারে হরমোনজনিত কারণে। আবার কারো কারো দেখা যায় হঠাৎ করেই রক্তচাপ কমে যায়। বিভিন্ন অসুস্থতাজনিত কারণে এটা হতে পারে। আবার ব্যায়াম, ক্লান্তির কাজ এবং ঠিকমত না খেলেও রক্তচাপ কমে যেতে পারে। তাই লো প্রেশার কেন হল সেটা আগে বুঝতে হবে।

লো প্রেশার হলে মাথা ঘোরা, বমিভাব, অজ্ঞান হওয়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তভাব এরকম কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে লো  প্রেশারের সমস্যা থাকলে পরে এটি জটিল রোগের সৃষ্টি করে। এটি যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে।

লো ব্লাড প্রেশারে কী খাবেন

যাদের রক্তচাপ প্রায় সময় কম থাকে এবং কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের কারণে লো ব্লাড প্রেশার হয় তারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার রাখতে পারেন। এতে ধীরে ধীরে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসবে।

  • আয়রন, ভিটামিন সি, বি ১২, ও ফলেট শরীরের রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এই সব খাদ্য উপাদানগুলো যে খাদ্যের মধ্যে পাওয়া যায় সেসব খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
  • ডিম হাইপোটেনশনের রোগীদের জন্য উপযোগী খাদ্য। ডিমকে আদর্শ খাদ্যও বলা হয়। ডিমে আছে ভিটামিন বি ১২, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। স্যুপ, কফি, ফলের রস, দুধ, শরবত ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • টক জাতীয় ফলে থাকে ভিটামিন সি। এ ছাড়াও পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা সোডিয়ামের কার্যকারিতা ঠিক রাখে। তাই লেবু, মালটা, কমলা জাতীয় ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
  • গরু, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, ডাল, লাল শাক, পালং শাক, কচু শাক, সিমের বিচি, মিষ্টি কুমড়ার বিচি ও শুকনা ফল আয়রনের ভালো উৎস। এ ছাড়া এতে সোডিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে।
  • ডাবের পানিতে থাকে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়ায়। তাই ডাবের পানি খাওয়া ভালো।
  • যাদের ব্লাড প্রেশার একদম লো থাকে তারা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এটি রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • অসুস্থতাজনিত কারণে যেমন জ্বর, ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে প্রেশার কমে যেতে পারে।

এ সময়ে তাৎক্ষণিক যেসব খাবার দিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে-

  • স্যালাইন প্রেশার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যালাইন খেলে তাৎক্ষণিক প্রেশার বাড়তে থাকে। এ ছাড়া লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে হালকা একটু চিনি যোগ করে খাওয়ানো যেতে পারে।
  • আঙ্গুরের রসও প্রেশার বাড়ানোর জন্য খুবই উপকারী।
  • লবণযুক্ত খাবার যেমন চিপস, স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে। 

     

Comments