থাকসিনকে কারাগার থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে কারাগার থেকে পুলিশের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ১৫ বছর স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে দেশে ফিরেই গ্রেপ্তার হন তিনি।
বার্তাসংস্থা এএফপি আজ বুধবার জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের ১ দিন পর অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দেশটির জনপ্রিয় নেতা থাকসিন।
থাকসিন (৭৪) দেশটির ২ বারের প্রধানমন্ত্রী ২০০৬ সালের অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।
কর্মকর্তারা জানান, গতকাল মধ্যরাতে (মঙ্গলবার দিবাগত রাত) একাধিক স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে কারাগারের কোয়ারেন্টিন থেকে পুলিশের হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়।
থাকসিনের দেশে ফিরে আসার দিনেই তার দল ফেউ থাই পার্টি সামরিকপন্থী দলগুলোর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়ার সমঝোতার ভিত্তিতে সরকারে ফিরেছে। যার ফলে সমগ্র থাইল্যান্ডজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, তার কারাদণ্ড কমানো বা স্থগিত করার জন্য ইতোমধ্যে একটি গোপন চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
কারাগারের সংশোধন বিভাগের মুখপাত্র সিতথি সুতিভং বুধবার রাতের শেষভাগে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কারাগারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানান, থাকসিন ঘুমের অভাব, উচ্চ রক্ত চাপ ও রক্তে অক্সিজেনের অভাবে ভুগছেন।
'তিনি একাধিক রোগে আক্রান্ত, যার জন্য তার যত্নের প্রয়োজন—বিশেষত, হৃদরোগের জন্য। কারাগারে এ ধরনের সেবা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত উপকরণ নেই', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'ডাক্তার জানান, তার জীবনের ওপর সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে তাকে পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো উচিৎ।'
ব্যক্তিগত জেট বিমানে করে ব্যাংকক আসার পরপরই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, থাকসিনকে কারাভোগ করতে হবে।
ইতোমধ্যে থাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্রেথা থাভিসিন পার্লামেন্টের অনুমোদন পেয়েছেন। আজ বুধবার দেশটির রাজা মহা ভাজিরালংকর্নও তাকে অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার পথে আরও কোনো বাধা নেই।
২০১৪ সালে সর্বশেষ দলটির তৎকালীন নেতা ইংলাক সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। থাকসিনের আপন বোন ইংলাককে ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
আবাসন খাতের ধনকুবের স্রেথা থাভিসিন একটি বিতর্কিত জোটের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, যার মধ্যে আছে থাকসিন ও ইংলাককে ক্ষমতাচ্যুত করা সামরিক নেতাদের দলগুলো।
নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েও সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়েছে বিকল্প ধারার দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি (এমএফপি)।
কিন্তু এমএফপি'র নেতা পিটা লিমজারোয়েনরাত প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে বড় আকারের বাধার শিকার হন। তিনি রাজকীয় পরিবারকে রক্ষার জন্য ও ব্যবসা বাণিজ্যে একচেটিয়া সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রণীত আইনের সংস্কারের ঘোষণা দিলে এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় রক্ষণশীল সিনেটররা। যার ফলে দৌড়ে পিছিয়ে যান তিনি এবং গঠিত হয় ফেউ থাই পার্টির জোট।
Comments