তথ্য চাওয়া ও পাওয়ার অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'তথ্য চাওয়া ও তথ্য পাওয়া মানুষের অধিকার। সেই অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন মানুষ কোনো তথ্য চাইলে সেটা তারা পেতে পারেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগের কোনো রাখ-ঢাক কিছু নেই। কোনো তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে এ ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের নেই। বরং আমরা যা করব, সম্পূর্ণভাবে জনগণকে জানিয়ে, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে জনগণের কল্যাণ করাটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাই।'
আজ রোববার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নবনির্মিত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন, তথ্য কমিশন ভবন উদ্বোধন ও বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিটিআরসির ব্যান্ডউইথ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সাবমেরিন কোম্পানি লিমিটেড গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্তির লাইসেন্সও প্রদান করা হয়েছে। সারা দেশে অপটিক্যাল ফাইবার বিস্তৃতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার ৩৪৮ কিলোমিটার। সব অঞ্চলই সংযুক্ত করা হবে।'
'আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কিন্তু কোনো সুযোগই ছিল না। কিছুই ছিল না। আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখনই কিন্তু এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে,' বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'এখন ফোরজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত আছে আর সীমিত আকারে ফাইভজি, তবে ফাইভজি বেশির ভাগই করা হবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্টে। ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সেবায় এক দেশ এক রেট চালু করা হয়েছে। অত্যাধুনিক স্মার্ট ও ফিচার্ড মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও সংযোজনের লক্ষ্যে ১৬টি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। মেইড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ও হ্যান্ডসেট বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।'
২০১১ থেকে ২০২২, এই ১২ বছরে বিটিআরসি শুধু তরঙ্গ বরাদ্দ দিয়ে রাজস্ব আয় করেছে ৪ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, 'ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব এটা ২০০৮ এ আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করি। আজকের বাংলাদেশ কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ।'
সরকারি অফিস-আদালত সব জায়গায় ডিজিটাল সিস্টেম চালু হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'মনে হয়েছিল মোবাইল ফোন বা এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের জন্য বোধ হয় পোস্ট অফিসগুলো অকেজো হয়ে যাবে। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, প্রত্যেকটা পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল সেন্টার করা হবে। এখন ৮ হাজার ৫০০টি ই-সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩৫ হাজার ২৫৬টি ওয়েবসাইট সম্বলিত বিশ্বের বৃহত্তম ওয়েবপোর্টাল—আমরা নাম দিয়েছি "তথ্য বাতায়ন" চালু করা হয়েছে।'
'আমার মনে হয় বিশ্বে এটা সব থেকে আধুনিক এবং সর্ববৃহত্তম ওয়েবপোর্টাল আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি,' যোগ করেন তিনি।
এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাংলাদেশে যাতে সিনেমা তৈরি হয়। এর পেছনে কিন্তু আমার মায়ের একটু অবদান আছে। একবার, অনেক আগের কথা, সিনেমা দেখে রিকশায় করে মা-আব্বা ফিরছিলেন। মা বলছিলেন যে, কেন, আমরা বাঙালিরা বাংলাদেশে সিনেমা তৈরি করতে পারি না? এই তখনই কিন্তু উদ্যোগটা নেন এফডিসি গড়ে তোলার।'
'পরে যখন আমার আব্বা মিনিস্টার হন, তখন উদ্যোগটা নিয়েছিলেন। আর এরপর বাংলাদেশে অনেকগুলো বই হয়। যেমন "মুখ ও মুখোশ", "আছিয়া", এ রকম অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছিল। আমাদের বাঙালিরা, তারাই তৈরি করেছিলেন। আসলে সিনেমা শিল্পের যাত্রা এই উপমহাদেশে কিন্তু কলকাতা থেকেই। আমাদের বাংলাদেশে যে সিনেমা শিল্প তৈরি করা পাকিস্তান আমলে এটা কল্পনারও বাইরে ছিল,' বলেন তিনি।
Comments