বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে তিস্তা নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকা, আমন ধানের ক্ষেত। তিস্তাপাড়ে ১৮টি ইউনিয়নের ৯০টি গ্রাম ও চর এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
লালমনিরজহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসছে। এ কারণে তিস্তা নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। উজান থেকে আসা পানির চাপে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খোলা রাখা হয়েছে।'
আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি কমার কোনো সম্ভবনা নেই, বরং পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
লামনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর গ্রামের কৃষক সুলতান মণ্ডল (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ৬ বিঘা জমির আমন ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে বাড়ি ভেতরেও নদীর পানি ঢুকছে। আমরা এখনো বাড়িতে আছি। গরু-ছাগল উঁচু স্থানে রেখে দিয়েছি। বাড়ির ভেতরে পানি বাড়লে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।'
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৬০) জানান, বাড়ির ভেতর ২-৩ ফুট পানি ঢুকে পড়ায় তারা গরু-ছাগল নিয়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। প্রায় ২ হাজার মানুষ আজ সকাল থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিস্তায় আরেকটু পানি বাড়লে এসব পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে হবে।'
লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কিন্তু এখনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তবে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমরা তিস্তাপাড়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।'
Comments