নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এখন জনদাবি: বাম জোট

‘কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে বিরোধী দলের আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন করছে। জনগণের কাছে এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ আগের মতো এবারও একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এটা জনগণ হতে দিতে পারে না।’
ছবি: সংগৃহীত

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, 'দেশের প্রায় সব সক্রিয় বিরোধী দলই নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করছে। এই দাবি ইতোমধ্যে একটি জনদাবিতে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে বিরোধী দলের আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন করছে। জনগণের কাছে এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ আগের মতো এবারও একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এটা জনগণ হতে দিতে পারে না।'

'নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধের দাবিতে' আজ বুধবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।  

বাম গণতান্ত্রিক জোট, কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক এবং বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও বাসদের (মার্কসবাদী) নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক জয়দীপ ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

নেতারা বলেন, 'এই সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগের তথাকথিত শান্তি সমাবেশ থেকে তাদের নেতারা যে ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন, তাতে বোঝা যায় তারা একটি সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে দেশকে নিয়ে যেতে চাইছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার আজ দেশের যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে, নির্দলীয় তদারকি সরকার গঠন করে তার অধীনে নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় সমাধান নেই এবং তা গ্রহণযোগ্যও নয়।'

'বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাচাঁমাল নেই, কারণ ডলার নেই। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট, মেগাপ্রকল্পে মেগা লুটপাট ও অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি, অর্থ পাচার, ব্যাংক লোপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ দুর্দশাগ্রস্ত। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী সরকারের আমদানি নির্ভর জ্বালানি নীতি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট', যোগ করেন তারা।

সারাদেশে বাজারে আগুন জ্বলছে উল্লেখ করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেন, 'সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। কারণ বাজার আজ গুটিকয়েক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি চিনি, আদা, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে।'

'সরকার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও কালোবাজারীদের নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কারণ আজ সরকার ও সিন্ডিকেট একাকার। আবার সরকারের মন্ত্রীদের নানা বক্তব্য এই ব্যবসায়ীদের লুটপাটের ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করছে', বলেন তারা।

নেতারা 'গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য' জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Prof Muhammad Yunus for a road map to reforms and the next general election.

4h ago