চ্যালেঞ্জটা জেনে স্বপ্ন দেখছেন রামহিম
টেলিভিশনে দেখার পর শৈশবেই টেবিল টেনিসের প্রেমে পড়েন রামহিম লিয়ান বম। এই প্রেমই তাকে দিয়েছে ছুটে যাওয়ার তাড়না। অবশেষে শনিবার দেশের প্রথম আদিবাসী হিসেবে পুরুষ এককে জাতীয় টেবিল টেনিসের শিরোপা জেতেন তিনি।
১৮ বছরের রাহমিম দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বালক ও পুরুষ দুইটি এককেরই জাতীয় শিরোপা জিতে নিলেন। সেইসঙ্গে দলীয় ইভেন্টে চট্টগ্রামকে চ্যাম্পিয়ন করতেও রাখলেন ভূমিকা।
'আদিবাসী টেবিল টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে আমি গর্বিত। চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে খুবই খুশি।' চট্টগ্রাম থেকে গতকাল মোবাইল ফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন রামহিম। তখন তার কন্ঠেও ছিল আনন্দের রেশ।
২০১২ সালে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসী খেলোয়াড়দের তুলে আনার উদ্যোগ নিলে তা গ্রহণ করেন পুরোহিতের ছেলে রামহিম, '২০১২ সালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহযোগিতায় আমি খেলা শুরু করি। ২০১৫ সালে পরীক্ষার কারণে খেলতে পারিনি। ২০১৬ সালে ফেডারেশনের মাধ্যমে কোরিয়ান কোচের অধীনে ট্রেনিং করি। ধীরে ধীরে খেলাটা নিয়ে আরও আগ্রহ জন্মে। যখন শুরু করি তখন ভাবিনি এতদূর আসব।'
দুই বারের চ্যাম্পিয়ন মোহতাশিম আহমেদ হৃদয়কে হারিয়ে সিনিয়র এককে চ্যাম্পিয়ন হওয়া এই তরুণ জানান তার দুই বছরের পরিশ্রমের ফল এই অর্জন, 'সবাই চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। দিনশেষে যে পরিশ্রম করে, ত্যাগ করে সেই জেতে। আমি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য দুই বছর ধরে প্রস্তুত হয়েছি। যে কারণে আমি সফল হলাম। আমি ফেডারেশন কর্তাদের ধন্যবাদ দিব তারা আমাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন।'
তবে শিরোপা জেতার চেয়ে ধরে রাখা যে কঠিন তাও জানা আছে তার, 'শিরোপা জেতার চেয়ে ধরা রাখা আরও চ্যালেঞ্জের। আমি এটা জানি, এটা জেনেই পরিশ্রম করে যাব।'
ফেডারেশনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে সাউথ এশিয়ান গেমসেও সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন তিনি, 'কোন সন্দেহ নাই ফেডারেশন খুব ভালো সুবিধা দিচ্ছে, ভালো কোচ আছে। আমরা জুনিয়র সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো করেছি। গোল্ড, ব্রোঞ্জ পেয়েছি। আমাদের বিশ্বাস মূল সাউথ এশিয়ান গেমসেও আগামীতে ভালো করব।'
এসব জায়গায় যেতে স্পন্সর ও সরকারকে খেলাটার অগ্রগতিতে এগিয়ে আসার আহবান জানান তরুণ ক্রীড়াবিদ।
Comments