যুবলীগ নেতার কবজি বিচ্ছিন্ন: জেলা আ. লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা
নাটোরে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হাতের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ ৩০ জনের নামে থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী মিঠুনের ছোট ভাই স্বপ্ন বাদশা নাটোর সদর থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও একই ইউনিটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মর্তুজা আলী বাবল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নান্নু শেখ এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুলসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার ৫ আসামিকে গতরাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন—মো. আশরাফ হোসেন মণ্ডল (৫০), মো. ওবাইদুল সরদার (৪০), মো. রুমন (২৬), মো. মহসিন মণ্ডল (৩১) ও মো. নাসির (৩৭)।
এর আগে রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকায় পৌরসভার ৩ নম্বর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুনকে কুপিয়ে হাতের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রতিপক্ষের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মিঠুনের ভাই স্বপ্নসহ আরও ৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত মিঠুনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে বলা হয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ও যুগ্ম সম্পাদক মর্তুজা উপস্থিত থেকে নির্দেশ দিয়ে মিঠুনের ওপর হামলা করিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ হামলায় আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। মিঠুনের ওপর যে সময়ে হামলা হয়েছে, সেসময় আমি জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কার্যালয়ে বসে মৎস্যজীবী লীগের কমিটি করছিলাম।'
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে তার এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মিথ্যা অভিযোগে মামলা নেওয়া হলো কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সখ্যতা আছে। তিনি বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তিনি পক্ষপাতিত্ব করে তদন্ত না করেই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।'
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নাছিম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও শিশুসুলভ। সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওসি একা মামলা নথিভুক্ত করতে পারে না। সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী এই মামলা হয়েছে।'
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় এই বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নাটোরে দীর্ঘদিন ধরেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান ও নাটোর-২ আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শহরের ভবানিগঞ্জ মোড় এলাকায় শরিফুল ইসলাম রমজান গ্রুপের নেতা নান্নু শেখকে কোপানোর অভিযোগ ওঠে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের লোকজনের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় অভিযুক্ত আসামি ছিলেন মিঠুন।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই ঘটনার জেরেই মিঠুনের ওপর হামলা হয়েছে।
Comments