‘৫ কেজি চাউল কয়দিন যাবে বাহে, সরকারক কন সারা বছর টিসিবির পণ্য দিবার’

রংপুরে টিসিবির পণ্য কিনতে ট্রাকের পেছনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

'বাজারত সব জিনিসের দাম বেশি, সরকারক কন সারা বছর টিসিবির পণ্য দিবার।' রংপুর শহরের কেরানীপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মোছলেমা বেগম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আক্ষেপ ঝরে তার কণ্ঠে। তিনি বলেন, '৫ কেজি চাউল কয়দিন যাবে বাহে। সরকার যদি হামাক আরও বেশি করি জিনিসপত্র দেইল হয়, তাইলে হামার কষ্ট কমিল হয়।'

আজ রোববার সকাল থেকে রংপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে ক্রেতারা ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ৫ কেজি চাল পাচ্ছেন ৪৭০ টাকায়।

নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বেকায়দায় থাকা বিভিন্ন পেশার মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে ভিড় করতে দেখা যায়। ক্রেতাদের চাহিদা ও উপস্থিতির তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পণ্য দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুরের মুন্সিপাড়া কেরামতিয়া স্কুল মোড়ে টিসিবির খাদ্যপণ্য বিক্রি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের সচিব উম্মে ফাতিমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ প্রমুখ।

সকাল থেকে মুন্সিপাড়া কেরামতিয়া স্কুল মোড়, হাজীরহাট পুরাতন রাস্তা, কেরানীপাড়া চৌরাস্তা মোড়, সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়। বাজার দরের চেয়ে টিসিবির পণ্যের দাম কম হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে লোকজনকে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

মুন্সিপাড়ায় লাইনে দাঁড়িয়ে কথা হয় জহর আলী নামে প্রবীণ একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'সরকারের এই উদ্যোগ ভালো। লাভবান হচ্ছে নিম্ন আয়ের পরিবার। কিন্তু আমাদের মতো পরিবারের জন্য বছরজুড়ে এই কার্যক্রম চললে বেশি ভালো হতো। বাজারে চাপ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে তো আয় রোজগার বাড়েনি। ছোট্ট একটা চাকরি করি, বাড়তি আয়ের সুযোগও নেই। ৬ সদস্যের পরিবার। মাসের শুরুতেই বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়। এ জন্য টিসিবির পণ্য মাসে একবার পেলে পোষায় না।'

কম দামে পণ্য কেনার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা বেশিরভাগেরই একই দাবি। তারা বলছেন, বাজারের তুলনায় টিসিবির পণ্যের দাম প্রায় অর্ধেক। এতে তাদের সংসার খরচের চাপ কিছুটা হলেও কমে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় টিসিবি কম পণ্য দেয়। এ জন্য সরকারের উচিত মাসে একাধিকবার পণ্য দেওয়া।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, আজ সিটি করপোরেশনের ১ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি এবং কাউনিয়া উপজেলার ৪টি পয়েন্টে বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথমদিনে ১১ হাজার ৯৪ জন এসব পণ্য কিনতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এই কার্যক্রম চালু হবে।

তিনি আরও জানান, জেলায় সিটি করপোরেশন, ৩টি পৌরসভা ও ৮টি উপজেলার মোট উপকারভোগী সংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৩১২ জন। প্রত্যেকের জন্য ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৫ কেজি চাল বরাদ্দ আছে। তারা মুসুর ডাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০০ টাকা এবং ৩০ টাকা কেজি দরে চাল পাবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Public admin reforms: Cluster system may be proposed for ministries

The Public Administration Reform Commission is likely to recommend reducing the number of ministries and divisions to 30 from 55 to improve coordination and slash the government’s operational cost.

6h ago