স্নায়ুচাপে ড্রেসিং রুমেই দুই কিলোমিটার পায়চারী করেছেন স্টোকস!

ছবি: এএফপি

ধুঁকতে থাকা ইংল্যান্ডকে টেনে তুলে হ্যারি ব্রুক যখন বিদায় নিলেন, তখনও জয়ের জন্য তাদের দরকার ছিল ২১ রান। একাদশে ফেরা ক্রিস ওকস ও মার্ক উড এরপর বাকি কাজটা সেরে দলকে টিকিয়ে রাখলেন অ্যাশেজে। শেষদিকের সেই রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলোতে বেন স্টোকসের মনে জেঁকে বসেছিল স্নায়ুচাপ। ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক ওই সময়ে খেলা দেখায় মনোযোগ না দিয়ে ড্রেসিং রুমে পায়চারী করেছেন দুই কিলোমিটারের মতো!

হেডিংলিতে আগের দিন নাটকীয়ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এতে অ্যাশেজের শিরোপা পুনরুদ্ধারের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শিষ্যরা। পাঁচ ম্যাচে সিরিজের প্রথম দুটি হারলেও তৃতীয়টিতে এসে দলটি পেয়েছে কাঙ্ক্ষিত জয়ের স্বাদ। ঐতিহ্যবাহী দ্বৈরথের বাকি ম্যাচ দুটি হবে যথাক্রমে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ও ওভালে।

২৫১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় দিনের বিনা উইকেটে ২৭ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। তবে অজি পেসার মিচেল স্টার্কের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে ১৭১ রানে পতন হয় তাদের ষষ্ঠ উইকেটের। ফলে স্বাগতিকদের টেস্ট হারের পাশাপাশি সিরিজ হারের শঙ্কাও জেগে ওঠে। একপ্রান্ত আগলে থাকা ব্রুক সেসময় ওকসকে নিয়ে গড়েন ভীষণ মূল্যবান একটি জুটি। তাতে ধাক্কা সামলে জয়ের সম্ভাবনা উঁকি দিতে থাকে ইংলিশদের।

৯৩ বলে ৭৫ রান করা ব্রুক স্টার্কের পঞ্চম শিকার হয়ে ফিরলে ভাঙে ৭৩ বলে ৫৯ রানের জুটি। তখন ম্যাচের মোড় ফের ঘুরে যাওয়ার আভাস মেলে। কারণ ক্রিজে ওকসের সঙ্গী হওয়ার তালিকায় ছিলেন কেবল টেল এন্ডাররা। তবে উড গিয়ে ৮ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললে জয় নিশ্চিত হয় ইংলিশদের। চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন ওকস। তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৭ বলে ৩২ রানে। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ১৪ বলে ২৪ রান।

ওকস আর উড যখন ব্যাট করছিলেন, তখন মাঠের বাইরে বসে স্টোকস ভুগছিলেন স্নায়ুচাপে। জয়ের পর নিজের মানসিক অবস্থা নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আমি মিথ্যা বলব না, শেষদিকে আমি বেশ নার্ভাস ছিলাম। আমরা জানতাম যে অ্যাশেজ জেতার আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই ম্যাচটি জেতা দরকার। শেষ আধা ঘণ্টায় আমি ড্রেসিং রুমের চারপাশে প্রায় দুই কিলোমিটার পায়চারী করেছি। শেষ ২০ রান কীভাবে হয়েছে তা আমি সত্যিকার অর্থে দেখিনি।'

৩২ বছর বয়সী তারকা অলরাউন্ডার তুলে ধরেন একটি ক্রিকেটীয় বাস্তবতাও, 'যখন (মাঠের বাইরে থাকায়) আপনার করার কিছু থাকে না, তখন এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়ায়। আপনি কোনোভাবেই আর ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। আপনাকে কেবল খেলা দেখতে হয় এবং আশা করতে হয় যেন জিনিসগুলো আপনার পক্ষে আসে।'

চাপের মধ্যেও অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে সফল লক্ষ্য তাড়ায় ইংল্যান্ডের নায়ক ব্রুক। ২৪ বছর বয়সী তরুণ ব্যাটারকে নিয়ে প্রশংসা ঝড়ে স্টোকসের কণ্ঠে, 'ব্রুকি যেভাবে ব্যাট হাতে প্রথম বল থেকেই খেলা নিয়ন্ত্রণ করছিল তা বিস্ময়কর। সে মাঠে গিয়ে উল্টো প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয়... অ্যাশেজে এরকম প্রবল চাপের মুখে তার মতো তরুণের (এমন ব্যাটিং) অবিশ্বাস্য ছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago