উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে মৌলভীবাজারে ২৫০ পরিবার পানিবন্দি
উজানের পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ডের প্রায় ২৫০ পরিবার ও কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আজ বুধবার দুপুরের দিকে পৌর এলাকার ২, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িঘর ও দোকানে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পৌরসভার ৩ ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।'
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের কারণে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পৌর এলাকায় ধলাই নদীর পুরাতন সেতু সংলগ্ন এলাকার নালা দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে চন্ডিপুর, উত্তর আলেপুর, পানিশালাসহ ৪টি গ্রাম, সড়ক, কমলগঞ্জ থানা, ডাকঘর, কমলগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও আশপাশের বাড়িঘর নিমজ্জিত রয়েছে।
এছাড়া ভারী বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পতনউষার, আলীনগর, আদমপুর ও মাধবপুর এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন পৌর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ রহিম। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সম্প্রতি অপরিকল্পিতভাবে পৌরসভায় নালা স্থাপন করা হয়েছে। এই নালা দিয়ে ধলাই নদীর পানি প্রবেশ করায় বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। নালায় স্লুইস গেট না দিলে নদীর পানি বাড়লেও আমরা বারবার পানিবন্দি হয়ে পড়ব।'
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পর্যবেক্ষক সাকিব হোসেন ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টি না হলে নদীর পানি কমে আসবে। তবে উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টি না কমলে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে।'
ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা পুনর্বাসন ও সতর্কীকরণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনায় কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার উদ্যোগে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
জানতে চাইলে কমলগঞ্জের উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রইছ আল রিজুওয়ান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানিবন্দি পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।'
Comments