ব্রহ্মপুত্রে বাড়ছে পানি, ভাঙছে পাড়
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গত এক মাসে বসতভিটা হারিয়েছে শতাধিক পরিবার। কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ৩ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন অব্যাহত আছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতিপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নদের উদরে চলে গেছে একটি উচ্চবিদ্যালয়, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ঘরবাড়ি ও জমি।
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা গেছে, নদে পানি বাড়তে শুরু করলে গত এক মাস ধরে জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ভাঙনের কারণে নদের উদরে চলে গেছে বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগান ও অন্যান্য স্থাপনা। ভাঙনকবলিত ৩ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে নদের ভাঙন অব্যাহত থাকায় অনেকে রাস্তা ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চর ভগবতিপুর এলাকার কৃষক নুর ইসলাম (৬২) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদের ভাঙনে বসতভিটা ও ৪ বিঘা আবাদি জমি হারিয়েছি। ৩টি ঘর ভেঙে এনে রাস্তার ওপর রেখেছেন। ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।'
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন (৬৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, '১০ বিঘা আবাদি জমি ছিল। ৩ বিঘা ভাঙনে বিলীন হয়েছে। বসতভিটা ভাঙন-হুমকিতে থাকায় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছি।'
'আমাদের গ্রামে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন অব্যাহত আছে,' যোগ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১ মাসে ইউনিয়নের ৬০টি পরিবার ভাঙনে বসতভিটা হারিয়েছে। ইউনিয়নের একটি উচ্চবিদ্যালয়, মসজিদ ও কমিউনিটি ক্লিনিক নদের উদরে বিলীন হয়েছে। চর ভগবতিপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি ভাঙনকবলিত পরিবারের তালিকা প্রশাসনকে দিয়েছি। এখনো তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।'
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১ মাসে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বসতভিটা হারানো ১১৫ পরিবারের তালিকা পাওয়া গেছে। তাদেরকে পুনর্বাসনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই সরকারি সহায়তা বিতরণ করা হবে।'
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ চর ভগবতিপুর। সেখানে বালুভর্তি জিও বস্তা ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন ঠেকানোর কাজ চলছে।'
Comments