খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে ‘সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা আমি জানি না’

আইনমন্ত্রী
বক্তব্য রাখছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিতের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ল' রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেওয়া হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতার কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ এর (১) উপবিধি অনুযায়ী তার শাস্তি স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যে শর্তগুলো দেওয়া হয়েছে সেটা হচ্ছে, তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। তার অসুস্থতা যখনই গুরুতর হয়েছে, তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে আবার বাসায় ফিরেছেন। তাতে প্রমাণ করে যে, প্রথম কথা হচ্ছে তিনি অসুস্থ এবং দ্বিতীয় কথা হচ্ছে বাংলাদেশে তার সুচিকিৎসা হওয়ার মতো ব্যবস্থা আছে। আর এই আদেশে কোনো পরিবর্তন করার কথা আমি জানি না।'

'আমি এই গুজব শুনেছি যে, এই ফাইল নাকি আইন মন্ত্রণালয়ে চলে এসেছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, আমার মন্ত্রণালয়ে এ রকম কোনো ফাইল আসেনি এবং আমি এটাও বলতে পারি, এ রকম কোনো ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উঠেছে তার ব্যাপারেও আমি জানি না,' বলেন আইনমন্ত্রী।

আপনি বলেছিলেন ওনার (খালেদা জিয়া) সভা-সমাবেশে যেতে কোনো বাধা নেই। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন বাধা আছে। উনি সভা-সমাবেশে যেতে পারবেন কি না জানতে চাইলে আনিসুল হক গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'উনি শর্ত সাপেক্ষে মুক্ত আছেন। কী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তার পেছনে তো একটা ইতিহাস আছে। তার ভাই আবেদন করেন যে, তার বোন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে যে দুর্নীতির মামলায় সাজা দেওয়া হয় সেই সাজা স্থগিত রেখে প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতার কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) উপধারায় শর্তযুক্তভাবে তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।'

'এখন তিনি যদি বলেন, তিনি সুস্থ, তাহলে তার যে সাজা সেটা খাটার জন্য তাকে জেলখানায় যেতে হবে। এটা স্বাভাবিক। যে মুহূর্তে তিনি বলবেন যে তিনি সুস্থ, তার আর অসুস্থতার আবেদন আর থাকবে না। এখন যে তিনি মুক্ত সেটার প্রমাণ হচ্ছে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যে যান, সরকারের অনুমতি নিয়ে তাকে যেতে হয় না,' বলেন আইনমন্ত্রী।

সম্প্রতি একটি ভিসানীতি আমেরিকা ঘোষণা করেছে। সেখানে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের বিষয়টি এসেছে। সমসমায়িক সময় এই উপমহাদেশের ক্ষেত্রে মার্কিননীতিতে বিচার বিভাগকে স্পর্শ করতে দেখিনি। এই বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু এটি বাংলাদেশের ব্যাপারে দেওয়া হয়েছে, (ভিসানীতি) সরকারি-বিরোধী দল যার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হোক না কেন যখন আমার সঙ্গে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, এই ভিসানীতির কারণে আমরা কিন্তু অপমানিত হয়েছি।'

তিনি বলেন, 'এটা যদি সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ তারা করে আমাদের কোনো আপত্তি নেই কিন্তু তারা যদি আরবিট্রারি শুধু একটি দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তাহলে অবশ্যই আমাদের এই ব্যাপারে আপত্তি আছে। এখানে বিচার বিভাগকে কেন টেনে আনা হলো সেটা স্পষ্টিকরণের জন্য বলেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

13m ago