সরকারের পদত্যাগসহ ১৪ দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ

গণতন্ত্র মঞ্চ রোডমার্চ
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর দিনাজপুরের দিকে রোডমার্চ শুরু করে গণতন্ত্র মঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের পদত্যাগ, অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১৪ দফা দাবিতে দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর যাত্রা শুরু হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, 'আগামী ৭ তারিখ রংপুরে সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোড মার্চ সমাপ্ত হবে এবং সেখান থেকে আমরা আন্দোলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।'

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা পরিস্কার করে বলেছি যে, আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দিতে আসবেন না। কিন্তু ইতোমধ্যে জেনেছি, টাঙ্গাইলে তারা (সরকারি দল) আমাদের সমাবেশস্থলে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করেছে এবং পুলিশ এখনো পর্যন্ত আমাদের জন্য কোনো সমাবেশ স্থান নির্ধারণ করেনি।'

'আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই এক মুখে বলবেন সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন আরেক মুখে বিরোধী দল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে, জনগণের সামনে তার রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরবে সেখানে শান্তি সমাবেশের নামে এই কর্মসূচি বানচালের চেষ্টা করছেন।'

পরে নেতারা মিছিল নিয়ে মৎস্যভবন মোড় পর্যন্ত হেঁটে এসে ৭-৮টি মাইক্রোবাসে  করে যাত্রা শুরু করেন।

রোড মার্চে সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ শহিদুল ইসলাম বাবুল, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সম্বয়নকারী হাসনাত কাইয়ুম রয়েছেন।

গত ডিসেম্বর থেকে গণতন্ত্র মঞ্চ গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রাসহ  কর্মসূচি করার পর ঢাকার বাইরে এটি তাদের প্রথম কর্মসূচি।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি: প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে

সাইফুল হক বলেন, 'গতকাল প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তার এই বক্তব্যে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানের একটা বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে। এতদিন ধরে বলে সরকার আসছিল বিএনপিসহ বিরোধী দলের বিরুদ্ধে না কি এই ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।'

'গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটা পরিস্কারভাবে বেরিয়ে এসেছে যে, আজকে তারা (সরকার) যে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরেকটা দখলদারিত্ব, আরেকটা তামাশা নির্বাচন, আরেকটা একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটা বুঝতে পেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই তারা নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি জারি করেছে।'

ভারতের নতুন সংসদ ভবনে সেখানে ম্যুরালে অখন্ড ভারতের যে মানচিত্র স্থাপন করেছে এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'এখনো বাংলাদেশ সরকারকে এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখিনি, কোনো নিন্দা জানাতে দেখিনি। ভারতের এই তৎপরতা এই অঞ্চলের দেশগুলোর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সরাসরি উস্কানি, অস্থিতিশীলতা, একটা সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ তৈরি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।'

জোনায়েদ সাকি বলেন, 'গতকাল আওয়ামী লীগের নেতাদের যুক্তিতর্ক প্রধানমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, আমেরিকা যাওয়ার দরকার নাই, আমেরিকার ছাড়া নকি পৃথিবীতে আরও দেশ আছে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে কি বোঝা গেল? প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন ভিসানীতি দিয়েছে সেটা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ন্যাক্কারজনক সবচেয়ে কলঙ্কজনক যে নির্বাচন সেই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'এই ভিসানীতি বাংলাদেশের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছে। এই সরকার সারা বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা হেট করেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন করে। ২০২৩ সালেও তারা এই ধরনের নির্বাচন করতে যাচ্ছে বলেই যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসানীতি দিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago