গত শীতে গরম পানি বন্ধ, হিটিং বন্ধ ইউরোপের এ রকম দুরবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা
বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখনো ইউরোপের দেশগুলোর মতো দুরবস্থায় পড়েনি, পড়বেও না।

আজ রোববার সকালে চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'আজকে আমরা বাংলাদেশে বাজেট দিয়েছি। ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে বাজেট ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা। আর পহেলা জুন আমরা যে বাজেট দিয়েছি সেটা ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট। বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে বড় বাজেট আমরা দিয়েছি। এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা তা পারব। আওয়ামী লীগ পারবে।'

তিনি বলেন, 'আমি জানি অনেকে অনেক কথাই বলার চেষ্টা করেন কিন্তু আমরা বাংলাদেশটাকে চিনি, বাংলাদেশটাকে জানি, আর এই বাংলাদেশের মানুষের অবস্থাটাও আমাদের জানা। অবশ্য ঢাকা শহরে বসে...আমরা এখন বিদ্যুৎ দিয়েছি, সেখানে এয়ারকন্ডিশন্ড রুমে বসে; আমি এতগুলো টেলিভিশন বেসরকারি খাতে খুলে দিয়েছি সেখানে বসে টক শোর সুবিধা পাচ্ছেন। ভালো মতো টক শোও দিচ্ছেন এবং আমরা যা কাজ করি সেখানেই একটা সমালোচনা, সেখানেই একটা কিন্তু খুঁজে বেড়ানো। আর মানুষকে হতাশ করার কতগুলো কথা বলে বেড়ায়।'

'আর বাংলাদেশের বদনাম বিদেশিদের কাছে বলে বলে নিজেরা সেখান থেকে বোধ হয়...কী পায় আমি জানি না। কিছু হাদিয়া-টাদিয়া জোগাড় করে কি না তাও বলতে পারব না কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলেই তারা যেন তৃপ্তি পায়। যারা এসব বলছেন এবং বাজেট দেওয়ার পরেই তারা প্রতিবারই বলেন, "এটা সম্ভব না, এটা করতে পারবে না"—আমরা কিন্তু সেটা করি এবং করে দেখাই। যারা এসব কথা প্রতিবছর বলেন তাদের বলবো আপনি আগের বছর কী বলেছিলেন আর আজকের বাংলাদেশ কোথায় এসেছে একটু হিসাব করে তারা যেন দেখে,' বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'করোনাভাইরাস এবং বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। তার ওপর স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন এর ফলে সারা বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা পণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে। আমাদের জ্বালানির মূল্য বেড়েছে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে, খাদ্য পণ্যের মূল্য বেড়েছে, গম-চিনি যা কিছু আমরা কিনতে যাচ্ছি সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, পরিবহন বেড়ে গেছে, সঞ্চালন বেড়ে গেছে। এমনকি বিদেশে আমরা যে ঋণ নিয়েছি তারা সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে আমাদের অর্থনীতির ওপর একটা চাপ আছে। সেটা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের নিজেদেরও কিছু উদ্যোগ আছে।'

'আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দেবো: প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছিলাম কিন্তু আজকে সারা বিশ্বব্যাপী গ্যাস-তেল-কয়লা সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। টাকা দিয়েও কেনা যাচ্ছে না এ রকমই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। যার জন্য...আমি জানি এই গরমের মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে। একদিকে মূল্যস্ফীতি আর অপরদিকে এখন বিদ্যুৎ নেই—এই দুটি কষ্ট আমার দেশের মানুষ পাচ্ছে। আর একবার যদি পাংখায় বাতাস খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তারপরে না পেলে তো আরও কষ্ট হয়! এটাও তো বাস্তব কথা। অভ্যাস হয়ে গেছে এখন পাওয়া যাচ্ছে না কিন্তু যুদ্ধটা যদি না বাধতো আর স্যাংশন যদি না থাকত তাহলে আমাদের কোনো অসুবিধাই হতো না। আমরা ঠিকই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। আজকে যুদ্ধের কারণেই কিন্তু সারা বিশ্বব্যাপী...প্রত্যেকটা দেশই কিন্তু কষ্ট পাচ্ছে,' বলেন তিনি।

ইউরোপের উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, 'গত শীতের সময় ইউরোপের দেশগুলো; তারা গরম পানি ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ সব কিছু ইলেকট্রিসিটিতে চলে। গরম পানি বন্ধ, হিটিং বন্ধ এ রকম তাদের দুরাবস্থা। এমনকি বাজারে গেলে সীমিতভাবে কিনতে হবে। একটি পরিবার ৬টির বেশি ডিম কিনতে পারবে না। ১ লিটারের বেশি তেল কিনতে পারবে না, ৩টার বেশি টমেটো কিনতে পারবে না—ঠিক এই অবস্থাটা। বাংলাদেশ এখনো সেই দুরবস্থায় পড়ে নাই, ইনশাল্লাহ পড়বেও না। তবে সেখানে আমাদের দেশের মানুষকে একটা কাজ করতে হবে, আমি বারবার যেটা বলছি, আমাদের যত অনাবাদি জমি আছে সব জমি আমাদের চাষ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের যত জলাধার আছে সেখানে মাছের চাষ করতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago