রড পড়ে শিশু নিহত: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা

গতকাল রাজধানীর মহাখালী এলাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে শ্রমিকরা কাজ করার সময় একটি রড পড়ে ১২ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে লোহার রড পড়ে শিশু নিহতের ঘটনায় করা মামলায় প্রকল্পের এক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজধানীর মহাখালী এলাকায় গতকাল সোমবার এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মাথায় রড পড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শ্রমিক মো. হাসানের (৩২) বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের বনানী-মহাখালীর সাইট ম্যানেজার হাসিব হাসান মামলা করেন।

ঢাকা রেলওয়ে থানায় গতকাল করা এ মামলায় বলা হয়, পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শ্রমিকরা কাজ করার সময় ২৮৬ ও ২৮৭ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি জায়গায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে শ্রমিক মো. হাসানের হাত থেকে ৫-৬ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রড উপর থেকে একটি ফাঁকা দিয়ে নীচে পড়ে।

রডটি নীচে রেললাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়া একটি শিশুর মাথায় আঘাত করে এবং তার মাথায় ঢুকে যায়।

ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক সেকান্দার আলী আজ মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনাস্থল সংলগ্ন দোকানের কর্মচারীরা জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপরে কাজের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়েতে যখন শ্রমিকরা কাজ করছেন, তখন নীচ দিয়ে মানুষ হাঁটছিল। মহাখালী লেভেল ক্রসিংয়েও একই অবস্থা দেখা গেছে।

এক্সপ্রেসওয়ের এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি গতকাল রড পড়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে ছিলেন।

তিনি বলেন, 'এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জায়গার নীচে লোকজনের আনাগোনা ঠেকাতে কাউকে মোতায়েন করা হয়নি। আমরা শুধু গার্ডার বা ভায়াডাক্ট উত্তোলন জাতীয় বড় কাজের সময় মানুষের চলাচল সীমিত রাখি। ছোটখাটো কাজের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় না কর্তৃপক্ষ।'

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রড পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আঘাত পেয়ে এক শিশু আহত হলে পথচারীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর পৌনে ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

মামলার বাদী হাসিব হাসান জানান, রডটি একটি ছোট গর্ত দিয়ে নীচে শিশুটির গায়ে পড়ে।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'রড হাত থেকে পড়ে যাওয়ায় ওই শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।'

নীচে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই।'

তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলাটি তদন্ত করছে।'

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক সেকান্দার আলী ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা শিশুটির পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহ দাবি করতে এখনো কেউ আসেনি।'

Comments

The Daily Star  | English

Matarbari project director sold numerous project supplies

Planning Adviser Prof Wahiduddin Mahmud today said the Matarbari project director had sold numerous project supplies before fleeing following the ouster of the Awami League government on August 5.

1y ago