জীবন পরিবর্তনে যে ১০ অভ্যাসকে না বলবেন

জীবন পরিবর্তনে যে ১০ অভ্যাসকে না বলবেন
স্টার ফাইল ছবি

আপনি হয়তো জীবনে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন? কিন্তু পারছেন না। কারণ কিছু অভ্যাস আপনাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রেখেছে। আপনার জন্য ভালো খবর হলো জীবনে পরিবর্তন আনতে নিজেকে পাল্টে ফেলতে হবে না। বরং কিছু ছোট ছোট অভ্যাসকে বিদায় জানিয়ে ধীরে ধীরে জীবনে পরিবর্তন আনতে পারেন।

যে ১০টি অভ্যাসকে বিদায় জানালে জীবনে পরিবর্তন আনা সম্ভব সেগুলো জেনে নিন-

দেরি করা

কম-বেশি আমাদের সবার মধ্যে দেরি করার অভ্যাস আছে। তাই এখান থেকে বের হতে হবে। জীবনে পরিবর্তন আনার পথে সবচেয়ে বড় বাধা দেরি করার অভ্যাস। নিয়মিত দেরি করা আমাদের জন্য মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। যা জীবনে উন্নতির পথে বাধা হবে। তাই নিজের কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনি যতটুকু পারবেন ঠিক ততটুকুই করবেন। নিজের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি কাজ করতে যাবেন না। তাহলে দেখবেন দেরি করার অভ্যাসটা ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করেছে।

নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা

আমাদের আরেকটি বাজে অভ্যাস হলো নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা। যেমন- 'আমি এটা পারি না বা পারব না', 'এটা খুব কঠিন', 'এই কাজটি আমার জন্য অসম্ভব', 'কেউ আমাকে গুরুত্ব দেবে না', ইত্যাদি। এ ধরনের নেতিবাচক আত্ম-আলোচনা আমাদের কেবল একটি দিকে পরিচালিত করে, আর তা হলো হাল ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু হাল ছাড়লে আমরা ভালো কিছু করতে পারব না, তাই না?

সুতরাং আপনি যদি জীবনে পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে নেতিবাচক ধারণাকে ইতিবাচকভাবে ভাবুন। নিজেকে বিশ্বাস করুন। নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখুন এবং ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলুন।

ব্যর্থতাকে ভয় পাওয়া

হ্যাঁ, এটাই বাস্তবতা যে- আমরা সবকিছুতে সফল হব না। মাঝে মাঝে ব্যর্থতা আসবে। কিন্তু, তাই বলে কী থেমে থাকবেন? বরং মেনে নিতে শিখুন ব্যর্থতা জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। ব্যর্থতাকে এত ভয় পাওয়ার পরিবর্তে, নিজেকে থামিয়ে রাখার পরিবর্তে সুযোগকে সম্ভাবনায় পরিণত করার চেষ্টা করুন। সুযোগকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। মেনে নিন জীবনে সফল হতে, সামনে এগিয়ে যেতে কিছু ভুল হবে। আর এই ভুল ব্যক্তিগত বিকাশের স্বাভাবিক অংশ। মনে রাখবেন, বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো, 'ব্যর্থতাই সফলতার চাবিকাঠি'।

নিজেকে খুশি রাখা

আমরা সবসময় অন্যকে খুশি রাখার চেষ্টা করি। সেটা ভালো গুণ, কিন্তু আগে নিজের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিন। দেখা যায়, অন্যকে খুশি করতে গিয়ে আমরা নিজেকে অবহেলা করি। কিন্তু, এটি করা উচিত নয়। এই অভ্যাসটি নিজের সুন্দর জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই কিছু কিছু বিষয়কে সীমাবদ্ধ করুন। নিজের জন্য যেটি ভালো সেই বিষয়কে প্রাধান্য দিন। অবশ্যই নিজের সুখকে অগ্রাধিকার দিতে ভুলবেন না।

 নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা

ক্রমাগত নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না। এই অভ্যাসটি নিজের আত্মসম্মান ও আত্মবিশ্বাসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমাদের প্রত্যেকের আলাদা কিছু শক্তি ও দুর্বলতা আছে। তাই নিজেকে কখনো অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না। এটি কোনো ভালো কাজ নয়। এর পরিবর্তে নিজের কাজে মনোনিবেশ করুন। নিজের ছোট বা বড় সব ধরনের অর্জনকে উদযাপন করুন। সহজ কথা হলো নিজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করুন এবং অন্যের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় তুলনা বাদ দিন।

পারফেকশনিজম

আপনি কি জানেন সব দিক থেকে পারফেক্ট হওয়া খুব সহজ নয়! সবাই সেটা পারেও না। সব দিক থেকে পারফেক্ট হওয়ার চেষ্টা স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। আবার নিজেকে ব্যর্থও মনে হতে পারে। তাই সব দিক থেকে পারফেক্ট হওয়ার চেষ্টায় জীবনকে কঠিন করে তুলবেন না। এটা মেনে নিন কেউই নিখুঁত নয়। নিজের অপূর্ণতাকে মানিয়ে নিন ও ভুল থেকে শিখুন। আর পরিপূর্ণতার দিকে নজর না দিয়ে নিজের অগ্রগতির দিকে খেয়াল রাখুন।

অতীতে আলোকপাত

অতীতের ওপর নির্ভর করবেন না। কিংবা অতীতের ভুল, অনুশোচনা ও বিদ্বেষ মনের মধ্যে গেঁথে রাখবেন না। এগুলো আপনার এগিয়ে চলার পথে বাধা হতে পারে। সুতরাং, আপনি যদি এগিয়ে যেতে চান, যদি নিজের জীবনে পরিবর্তন আনতে চান- তাহলে অতীতকে ভুলে যেতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন, কিন্তু অতীত আঁকড়ে ধরে থাকা যাবে না। আর যেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব না সেগুলো বাদ দিন। নিজের বর্তমান কাজে মনোনিবেশ করুন। এটা ভাবুন যে, এখন যা করছেন তা কীভাবে ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলবে।

নেতিবাচক সম্পর্ক

আগেও বলেছি এবং আবারও বলছি, আপনার জন্য ক্ষতিকর এমন মানুষদের জীবন থেকে সম্পূর্ণভাবে ছেঁটে ফেলুন। তাদের সঙ্গে সময় কাটানো সীমাবদ্ধ করুন। এ ধরনের মানুষ আপনার আত্মবিশ্বাস ছিনিয়ে নেবে। আপনার সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এমন মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করুন যারা আপনাকে উত্সাহ ও অনুপ্রেরণা দেবে। একবার মেনে দেখুন, অবশ্যই জীবনে বড় পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

নিজের যত্ন নিন

নিজেকে অবহেলা করার মধ্যে 'দুর্দান্ত' কিছু নেই। বরং নিজের প্রতি অবহেলার অভ্যাস আপনাকে এগিয়ে যেতে বাধা দেবে। শুধু তাই নয় অসুস্থ করে ফেলতে পারে। তাই আজ থেকেই পরিবর্তন শুরু করুন এবং নিজের যত্ন নিন। সবকিছুর আগে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিন!

অজুহাত দেখানো

আমরা সবাই অজুহাত খুঁজি বা অজুহাত তৈরি করি। এটি বেশ খারাপ অভ্যাস। এই অভ্যাসকে আজই বিদায় জানান। অজুহাত তৈরি করা এমন একটি অভ্যাস যা আপনাকে দায়িত্ব নেওয়া থেকে বিরত রাখবে ও উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং, অজুহাত দেওয়া বন্ধ করুন এবং যা করণীয় তাই করুন। মানে নিজের কাজ করুন।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago