ইমরান খানকে ১৫ মে পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যাবে না: আদালত
আগামী ১৫ মে পর্যন্ত কোনো মামলায় ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। এ ছাড়া, গত ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দায়ের হওয়া কোনো মামলায় তাকে ১৭ মে পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ শুক্রবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় জামিনের নির্দেশে এ কথা জানিয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, বিচারপতি মিয়ানগুল হাসান আওরঙ্গজেব ও বিচারপতি সামান রাফাত ইমতিয়াজের ডিভিশন বেঞ্চ ইমরান খানের জামিন আবেদনের শুনানি করেন।
ডন নিউজ টিভির খবরে বলা হয়েছে, ইমরানের আইনজীবীরা আরও ৪টি আবেদন দায়ের করেছেন। ওই আবেদনে ইমরানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলার বিশদ বিবরণ সরবরাহে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে শুনানি শুরু হলে জুমার নামাজের কারণে কিছুক্ষণ পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, 'ইমরানপন্থী' আইনজীবীরা স্লোগান দেওয়ার পর বিচারকরা আদালত কক্ষ ছেড়ে চলে যান।
বিরতির পর স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার পর শুনানি শুরু হলে ইমরান ও তার আইনজীবী খাজা হারিস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
হারিস আদালতে যুক্তি দেখান, ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবৈধ। এনএবি কেবল তখনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে যখন মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, পিটিআই জানতে পেরেছে- এনএবি আনুষ্ঠানিকভাবে মিডিয়া রিপোর্টের মাধ্যমে ইমরানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। পিটিআই প্রধান গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। কিন্তু, আদালত কক্ষে ঢোকার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুনানির এক পর্যায়ে আদালত আবেদনকারীকে জিজ্ঞেস করেন, তাকে এই মামলার বিষয়ে কোনো জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল কি না। যার জবাবে হারিস নেতিবাচক উত্তর দেন।
তিনি বলেন, ইমরানকে একটি কল-আপ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এজন্য তিনি উপস্থিত হননি, তবে একটি লিখিত জবাব জমা দিয়েছিলেন। হারিস আরও বলেন, এনএবি এই মুহূর্তে 'পক্ষপাতদুষ্ট'।
আদালত এনএবি প্রসিকিউটর জেনারেল এবং ইমরানের আইনজীবীদের পরবর্তী শুনানিতে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ইমরানের জামিন বাতিল করা হবে নাকি বাড়ানো হবে সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির হন ইমরান খান। কড়া নিরাপত্তায় ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পৌঁছান তিনি।
টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে পুলিশ ও রেঞ্জার্স কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে এবং গেটের সামনে কাঁটাতার বসানো হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টার কিছু পর সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য আদালতের ডায়েরি শাখায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে বেআইনি বলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার ইমরানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেন।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। তাকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে তার দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকরা বিক্ষোভ করে এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসব এ সংঘর্ষে অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
Comments