শ্রীমঙ্গলের ‘করলা গ্রাম’

করলা চাষে বদলে গেছে যে গ্রামের নাম
পাড়ের টং গ্রামে দেখা যায়, পুরো গ্রামজুড়ে করলার মাঁচা। ছবি: স্টার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের পাড়ের টং গ্রাম। গ্রামটি 'করলা গ্রাম' হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। কারণ, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পাইকাররা গ্রামটিকে 'করলা গ্রাম' নামেই ডাকেন।

পাড়ের টং গ্রামে দেখা যায়, পুরো গ্রামজুড়ে করলার মাঁচা। সবুজ পাতায় ঘেরা এই মাচার নিচে ঝুলছে করলা। এই গ্রামের প্রায় দেড়শ একর জমিতে করলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি দৈনিক মজুরি হিসেবে করলা খেতে কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন সেখানকার নারীরা।

শুধু তাই নয় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এই গ্রামের করলা পাইকারদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে সারা দেশে।

পাড়ের টং এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের প্রায় দেড়শ একর জমিতে করলা চাষ হয়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ হাজার কেজি করলা পাইকাররা নিয়ে যান। এই করলা বেচাকেনার জন্য এখানে একটি বাজার ও অনেকগুলো আড়ত তৈরি হয়েছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা নসু মিয়া বলেন, 'এই গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম করলা চাষ করি আমি। আমার দেখাদেখি অনেকে করলা চাষ শুরু করলেন। এখন গ্রামের প্রায় সবাই করলা চাষ করছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় করলা চাষে সময় কম লাগে ও লাভ বেশি হয়। প্রতিদিনই পাইকাররা এসে করলা কিনে নিয়ে যান। করলা চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছি।'

একই গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, 'আমার নিজের জমি নেই। প্রতিদিন অন্যের খেতে কাজ করি। প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা মজুরি পাই। আমাদের এখানে কাজের সুযোগ হয়েছে। আমাদের গ্রামে এখন বেকার মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। নারী, পুরুষ, এমনকি আমাদের সন্তানরাও পড়াশোনার পাশাপাশি করলা খেতে কাজ করে।'

হবিগঞ্জের মিরপুর থেকে আসা পাইকার আরজু মিয়া বলেন, 'আমি প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার থেকে ৩ হাজার কেজি করলো কিনে নিয়ে যাই এই গ্রাম থেকে। এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। আমার মতো অনেক পাইকার এখানে আসেন।'

পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, 'পাইকাররা প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে আসেন। আমরা একটা দাম নির্ধারণ করি। পাইকাররা কিনে নিয়ে যান। আমি নিজেও একজন কৃষক।'

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, 'করলা চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এ বছর প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। পুরো উপজেলাতে আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ বছর করলা চাষে কোনো সমস্যা হয়নি, রোগ-বালাইও আক্রমণ করেনি।'

Comments

The Daily Star  | English

No sharp rise in crime, data shows stability: govt

The interim government today said that available data does not fully support claims of a sharp rise in crimes across Bangladesh this year

1h ago