ওআইসির জরুরি সভায় সুদানে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশের
সুদানে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি এবং শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সুদান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক জরুরি সভায় সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং সুদান র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রতি বাংলাদেশ এ আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরবের সভাপতিত্বে সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ওআইসির সদর দপ্তর জেদ্দায় সংস্থাটির নির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা সুদান পরিস্থিতি সম্পর্কে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, 'এ লড়াই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সুদানের জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষাকে ক্ষুণ্ণ করছে। সেখানে যুদ্ধের ফলে মানুষের জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।'
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যুদ্ধের ফলে ইতোমধ্যে সুদানে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে, খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারণে সেখানে ব্যাপক লুটপাট হচ্ছে, স্থানীয় জনগণ ও বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা লুটপাটের শিকার হচ্ছেন। অনেক বাংলাদেশী তাদের সর্বস্ব হারিয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, যারা প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন। বাংলাদেশ সরকার তাদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।'
সুদান থেকে বাংলাদেশিসহ বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সৌদি আরবের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, 'সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরও কয়েকটি দেশ সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।'
'যুদ্ধের সময় সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মিশন প্রধানের বাসভবনে হামলা হয়েছে' উল্লেখ করে সভায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, 'এটা দুঃখজনক এবং কূটনৈতিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।'
তিনি সুদান সরকার এবং যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক মিশন এবং মিশনের কর্মীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিতের অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা আশা করি যুদ্ধ বন্ধে ওআইসি, আফ্রিকান ইউনিয়ন, আরব লীগ এবং জাতিসংঘ একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে এবং সুদান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যুদ্ধরত সকল পক্ষকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসবে যা সুদানে অবিলম্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে।'
ওআইসির জরুরি সভায় সুদান, তুরস্ক, আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া, ইরাক, মিশর,পাকিস্তান, গাম্বিয়া, মৌরিতানিয়া, ক্যামেরুন, জিবুতি, চাদ, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন, লিবিয়া, মরক্কো, লেবানন, জর্দানসহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
সভায় সুদানে যুদ্ধ বন্ধ, শান্তি প্রক্রিয়া শুরু ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।
Comments