প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিকে সক্ষম করছে

আশ্রয়ণ প্রকল্প
রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘর। ফাইল ছবি: আনিসুর রহমান

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'আশ্রয়ণ প্রকল্প' যার অধীনে বাংলাদেশে গৃহহীন এবং বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য বাড়ি তৈরি করা হয়, তা দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুধা দূরীকরণ, লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের শীর্ষ ইংরেজি ম্যাগাজিন ইন্ডিয়া টুডে এমন একটি প্রতিবেদন ছেপেছে।

ম্যাগাজিনটি গত ১৫ এপ্রিলের সংখ্যায় ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে তার উদ্ভাবনী আশ্রয়ণ প্রকল্প, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করার জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় ভূমিহীন, গৃহহীন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ঘর প্রদানের লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

ইন্ডিয়া টুডে আরও উল্লেখ করেছে যে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জমি ক্রয়ের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের উদাহরণ পাওয়া যায়, সেখানে বাংলাদেশই প্রথম দেশ যেটি তার প্রান্তিক নাগরিকদের বাড়িসহ বিনামূল্যে জমির মালিকানা প্রদান করে যাতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় আনতে পারে।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, 'এই প্রকল্পের অধীনে সুবিধাভোগীদের শুধুমাত্র বাসস্থানই দেওয়া হয় না, বরং তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণের সময় দৈনিক ভাতা এবং প্রশিক্ষণের পরে ঋণ প্রদান করা হয়।'

এতে লেখা হয়, 'এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নারীদেরকে জমি ও বাড়ির অর্ধেক মালিকানা প্রদান করে, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য একটি অগভীর নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা এবং পুনর্বাসিত পরিবারকে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের ভিজিএফ-এর অধীনে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা।'

ইন্ডিয়া টুডে রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রশংসা করেছে, যা 'শেখ হাসিনা মডেল' নামে পরিচিত।

'আশ্রয়ণ প্রকল্প' একটি অনন্য উদাহরণ কীভাবে একটি বাড়ি সামগ্রিক পরিবার কল্যাণ ও সামাজিক উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হতে পারে।

ইন্ডিয়া টুডে তাদের প্রতিবেদনে প্রকল্পের দুই সুবিধাভোগীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে।

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ইটভাটা শ্রমিক মোকসেদুল একটি ঘরের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন, যাকে তিনি নিজের বলতে পারেন। তার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে, কারণ তাকে তার নিজের নামে একটি আধা-পাকা বাড়ি দেওয়া হয়েছে।

মোকসেদুল ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন যে তিনি এখন তার পরিবারের সঙ্গে খুব ভালোভাবে থাকতে পারেন।

এদিকে বরগুনার পাথরঘাটার বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়সী পিয়ারা বেগম ৩০ বছর আগে নদীতে তার পারিবারিক বাড়ি হারিয়েছেন।

১৬ বছর আগে তার স্বামী ক্যান্সারে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তার স্বামীর সঙ্গে নদীর তীরে থাকতেন।

ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, 'মুজিব শতবর্ষ' উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'আশ্রয়ণ' প্রকল্পের অধীনে নির্মিত একটি বাড়ি বরাদ্দ করায়' 'অবশেষে, পিয়ারা বেগমের দুঃখের অবসান ঘটেছে।'

তিনি ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, 'আমি সারাজীবন কষ্ট পেয়েছি। আমি কখনই ঘরের স্বপ্ন দেখিনি। এখন জমিসহ আধা-পাকা বাড়ি পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি বাড়ি দিয়েছেন। আমি খুব খুশি। যতদিন আমি বেঁচে থাকব, আমি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে 'আশ্রয়ণ' প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই আশ্রয়ণ উদ্যোগের আওতায় বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৫ লাখ ৭ হাজার ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে আধা-সমাপ্ত আবাসন ও দুই দশমিক দুই শতাংশ জমির সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
special security for foreign investors in Bangladesh

Police, Bida launch special security measures for foreign investors

Held meeting with officials of foreign companies, introduced dedicated emergency contact line

3h ago