ডা. জাফরুল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা

শেষবারের মতো ‘বড় ভাইকে’ দেখার জন্য…

শেষবারের মতো ‘বড় ভাইকে’ দেখার জন্য…
শেষ বারের মতো ‘বড় ভাইকে’ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা। ছবি: পলাশ খান/স্টার

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীসহ তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসা লোকজন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে 'বড় ভাই' ডাকতেন। শেষ বারের মতো 'বড় ভাইকে' দেখতে সকাল থেকেই তারা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শুরুর দিককার কর্মী ঝিনাইদহের মো. রুহুল আমিন (৭৬)। ২০১২ সালে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চাকরি ছাড়লেও এখনো ওই এলাকাতেই থাকেন। তিনি জানান, অনেক আগে একবার কেন্দ্রে খাবার নেওয়ার সময় তার পেছনে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। রুহুল আমিন খাবার না নিয়ে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছিলেন। সে সময় 'বড় ভাই' তাকেই এগিয়ে দিয়ে তার প্লেটে খাবার তুলে দেন।

গণস্বাস্থ্যের নারী কেন্দ্রে সেলাইয়ের কাজ করেন ফরিদা ইয়াসমীন। তিনি বলেন, 'প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোথাও কাজ পাচ্ছিলাম না। বড় ভাই আমাকে সেলাইয়ের কাজ দিয়েছেন। আমি বড় ভাইয়ের জন্য দোয়া করি যেন তিনি শান্তিতে থাকেন।'

শ্রদ্ধা জানানো শেষে অঝোরে কাঁদছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারী সূচি বেগম। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আড়াই বছর বয়সে জাফরুল্লাহ ভাই আমাকে পার্শ্ববর্তী চাকল গ্রাম থেকে আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে এনে বড় আদরে মানুষ করেছেন। গণপাঠশালার প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীও আমি। এখানেই বড় ভাইয়ের কাছে বড় হয়েছি।'

সে সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বহনকারী লাশবাহী গাড়ির সামনে হুইল চেয়ারে বসে কাঁদছিলেন আকলিমা আক্তার।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ থেকে ৩০ বছর আগে সিআরপি থেকে সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য আমাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠায়। সেই থেকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকেই আমাকে চাকরি দিতে চায়নি, বড় ভাই আমাকে চাকরি দিয়েছেন। তিনি এখানে এলেই আমাদের খোঁজ-খবর নিতেন, একসঙ্গে খাবার খেতেন। বড় ভাইয়ের মতো মানুষ আমরা আর পাব না।'

Comments

The Daily Star  | English

July 6, 2024: 'Bangla Blockade' announced

Beyond Dhaka, protesters hold the streets with equal resolve

22h ago