দৃষ্টিনন্দন ১০ পাসপোর্ট

দৃষ্টিনন্দন ১০ পাসপোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

বিদেশ ভ্রমণে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর মধ্যে একটি হলো পাসপোর্ট, যেটি ছাড়া দেশের গণ্ডি পার হওয়ার কথা চিন্তা করা যায় না। বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক, ভৌগোলিক সৌন্দর্য ও দেশগুলোর বিশেষত্ব।

ইন্টারন্যাশনাল ওয়েলথ ইনফোর রেটিং অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ১০ দেশের পাসপোর্ট নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা। 

নরওয়ে

নরওয়েজিয়ান পাসপোর্টের পাতা ওল্টালেই চোখে পড়ে পর্বত থেকে হ্রদ, নদী এবং বনের দৃশ্য। অতিবেগুনী রশ্মির আলোতে পাতাগুলো রাতের আকাশ এবং নর্দার্ন লাইটের হলোগ্রাফিক চিত্র আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালের নতুন ডিজাইনের সঙ্গে পাসপোর্টের নরওয়েজিয়ান প্যানোরামায় দেখা মেলে দেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং জলবায়ুর মনোরম মেলবন্ধন। 

ফিনল্যান্ড 

ফিনল্যান্ড বরাবরই প্রাকৃতিক পরিবেশ, বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যের স্থায়িত্ব এবং সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য বিখ্যাত। দীর্ঘকাল ধরে ফিনল্যান্ডের পাসপোর্টে মুস ডিজাইনের দেখা মিলেছে। ২০১৭ সালে মুসের পরিবর্তে তুষারপাত, ল্যাপল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ডের শীতের ক্লাসিক ছবি দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে পাসপোর্টে। থ্যালস গ্রুপের ফ্লিপবুক ডিজাইনের ফিনল্যান্ডের বারগান্ডি পাসপোর্টটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ডিজাইনের মধ্যে সেরা পাসপোর্ট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। 

নিউজিল্যান্ড 

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় থাকার পাশাপাশি, নিউজিল্যান্ডের পাসপোর্ট সুন্দর পাসপোর্টগুলোর মধ্যেও অন্যতম। কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে রূপালিরঙা অক্ষর এবং চিত্রের কন্ট্রাস্ট ডিজাইন করা হয়েছে এতে। শক্তি এবং সহনশীলতার প্রতীক হিসেবে পাসপোর্টের একপাশে রাখা হয়েছে রূপালি রঙের ফার্ন, যা শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডে পাওয়া যায়। ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এই প্রতীক কিছুটা পরিচিত মনে হতে পারে, কেন না দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সিতেও এটির দেখা পাওয়া যায়।

যুক্তরাজ্য 

যুক্তরাজ্যের একটি পাসপোর্টে ১৮৭টি দেশের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে বিধায় এটি হেনলি পাসপোর্ট সূচক অনুযায়ী বিশ্বের ১০টি শক্তিশালী পাসপোর্টের মধ্যে অন্যতম। কভারে রয়্যাল কোট অব আর্মস ছাড়াও গ্রেট ব্রিটেনের লন্ডন আই, শেক্সপিয়ার্স গ্লোব, হাউজ অব পার্লামেন্ট এবং লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডের দেখা মেলে।

১৯৮৮ সাল অবধি যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টের রঙ ছিল নীল, যা পরবর্তীতে অন্যান্য ইউরোপীয় পাসপোর্টের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় বারগান্ডি রঙে পরিবর্তন করা হয়। আবার ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে  পাসপোর্ট আবার নীল রঙে রূপান্তরিত হয়।

 

কানাডা

কানাডার রয়্যাল কোট অব আর্মসের নেভি ব্লু রঙের পাসপোর্ট ইংরেজি এবং ফরাসি দুটি ভাষার সংস্করণে পাওয়া যায়। অতিবেগুনী রশ্মির নিচে পাসপোর্টের পাতায় দেখা যায় উজ্জ্বল নিয়নে কানাডার সিগনেচার ম্যাপল পাতা, অটোয়া এবং আকর্ষণীয় নায়াগ্রা জলপ্রপাতের ফায়ারওয়ার্কসের খেলা। নান্দনিক হওয়ার পাশাপাশি এই হলোগ্রাফিক চিত্র গুরুত্বপূর্ণ এই ডকুমেন্ট নকল হওয়া থেকেও বিরত রাখে।

বেলজিয়াম

২০২২ সালের বেলজিয়ামের নতুন ডিজাইনের পাসপোর্টের বারগান্ডি কভারে এমবসড আউটলাইনে দেখা যায় দেশের ঐতিহ্যবাহী গিল্ডেড ক্রেস্ট। তবে পাসপোর্টের ভেতরের পাতায় পাওয়া যায় আরও চমকপ্রদ দৃশ্য। আগের ডিজাইনে সেখানে প্রাকৃতিক দৃশ্য থাকলেও পরিবর্তিত ডিজাইনে দেখা যায় বেলজিয়ামের কমিক স্ট্রিপের জনপ্রিয় চরিত্র। তাই পাসপোর্টে টিনটিন বা স্মার্ফকে দেখলে অবাক হবেন না যেন!  

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার নীলরঙা পাসপোর্টের কেন্দ্রে দেখা যায় কমনওয়েলথ কোট অব আর্মস, যার দুপাশে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান প্রাণী ক্যাঙ্গারু এবং ইমু। ডিজাইনের একেকটি শিল্ড ৬টি রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। অস্ট্রেলিয়া পাসপোর্টে প্রথম 3M™ কালার ফ্লোটিং ইমেজ প্রযুক্তি ব্যবহারকারী প্রথম দেশ। অতিবেগুনী রশ্মির নিচে নির্দিষ্ট কোণে কাত করলে পাসপোর্টের ক্যাঙ্গারুকে লাফিয়ে উঠতে দেখা যেতে পারে।  

ফিলিপাইন 

ই-পাসপোর্টের প্রথম পাতায় ফিলিপাইন ঈগলের ছবি পাসপোর্টের ডিজাইনে যুক্ত করেছে ভিন্ন মাত্রা। পাসপোর্টের শেষের দিকে দেখা যায় জাতীয় প্রতীক, সাংস্কৃতিক ল্যান্ডমার্ক এবং জাতীয় সঙ্গীতের লাইন। আর মধ্যে পাওয়া যায় চকোলেট পাহাড়, মায়ন আগ্নেয়গিরি এবং বানাউ রাইস টেরেসের শ্বাসরুদ্ধকর দর্শনীয় স্থানের দৃশ্য। 

ইন্দোনেশিয়া

বেশিরভাগ দেশের পাসপোর্টে ল্যান্ডমার্কের দৃশ্য ফুটিয়ে তুললেও, ইন্দোনেশিয়া মাউন্ট কেলিমুতুর ক্রেটার হ্রদ থেকে ভয়ানক কমোডো ড্রাগনের মতো প্রাকৃতিক বিস্ময় এবং বন্যপ্রাণীকে প্রাধান্য দিয়েছে। এ ছাড়া পাসপোর্টে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে।

 

জাপান 

২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট ঘোষণা করা হয়েছে জাপানের পাসপোর্টকে। যেটির ১৯৩টি দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে। লাল ব্যাকগ্রাউন্ডে সোনালি ফুলে কাভার ডিজাইন করা হয়েছে এটির। চেরি ফুলের পরিবর্তে শরৎ, ফসল, আভিজাত্য এবং জাপানি জাতির প্রতীক হিসেবে কভারে দেখা যায় চন্দ্রমল্লিকার ছবি। 

তথ্যসূত্র: সিএনট্রাভেলার, পাসপোর্ট ইনডেক্স

গ্রন্থনা: আসরিফা সুলতানা রিয়া 

Comments

The Daily Star  | English

‘No room for politics under AL name, ideology’

Nahid Islam, adviser to the interim government, spoke with The Daily Star on the nation's key challenges and the way forward.

12h ago