চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে আহত ছাত্রলীগ নেতা হাসপাতালে
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া বাজারে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সবুজ মালাকার (৩০)। সে সময় পাল্টা হামলায় আরও ৩ জন আহত হন।
তারা হলেন—জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফুল হাসান (৩৮) এবং সবুজের সহযোগী রাকিবুল ইসলাম (১৮) ও শাহেদ আবদুল্লাহ আরিফ (২৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত রাত ১০টার দিকে হলদিয়া গুরুদল এলাকায় তরমুজ চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে বের হন সবুজ। সে সময় তার অন্তত ১০ জন সহযোগী উপস্থিত ছিলেন। এলাকাবাসী তাদের ঘেরাও করে গণপিটুনি দেয়।
তারা আরও জানান, আহত সবুজ মালাকারকে স্থানীয় বাসিন্দারাই আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সবুজ মালাকার বর্তমানে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
'আমি আমার কয়েকজন দলীয় লোকজন নিয়ে হলদিয়া বাজারের আওয়ামী লীগ অফিসে বসে সময় কাটাচ্ছিলাম। সে সময় অ্যাডভোকেট আরিফের লোকজন পূর্ব শক্রতার জের ধরে আমার ওপর হামলা করে,' দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন সবুজ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট আরিফুল হাসান বলেন, 'সবুজ মালাকার ১০ থেকে ১২ জন দলীয় ক্যাডার নিয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষিদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করছিল। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দিয়েছে। ওই সময় আমি আমার গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথে জটলা দেখে দাঁড়ালে সবুজ ও তার বাহিনী আমার ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমার হাত ভেঙ্গে গেছে।'
স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও সবুজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। হলদিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি বাসুদেব শীল বলেন, 'সবুজ মালাকার আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। টাকা না দিলে আমাকে বাড়িছাড়া করার হুমকি দিয়েছে।'
দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি আলামিন শরীফ বলেন, 'সবুজ মালাকার আমার কাছ থেকে জোর করে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে।'
হলদিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী এখলাশ প্যাদা বলেন, 'তরমুজ বিক্রির আগেই সবুজ আমার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে।'
একই গ্রামের আরেক তরমুজ চাষি খালেক মোল্লা বলেন, 'সবুজ মালাকার তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। টাকা না দিলে তরমুজ বিক্রি করতে দেবে না বলেও হুমকি দিয়েছে।'
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে চাঁদাবাজির বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তিনি জানান, সবুজ মালাকারের নামে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে আমতলী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
Comments