লাঙ্গলবন্দে ‘পাপমুক্তির’ স্নানোৎসব শুরু মঙ্গলবার রাত থেকে

স্নানোৎসবে পূণ্যার্থীরা। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

নারায়ণগঞ্জে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে আগামীকাল মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র মহাষ্টমী স্নানোৎসব।

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি সরোজ কুমার সাহা জানিয়েছেন, তিথি অনুসারে আগামীকাল রাত ৯টা ১৮ মিনিটে স্নানের লগ্ন শুরু হবে। শেষ হবে বুধবার রাত ১০টা ৪৭ মিনিটে।

এই স্নানোৎসবে অংশ নিতে ইতোমধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে পুণ্যার্থীরা লাঙ্গলবন্দে আসতে শুরু করেছেন বলে জানান সরোজ কুমার।

হিন্দু পুরাণ মতে, মহামুনি জন্মদগ্নির আদেশে পুত্র পরশুরাম মা রেনুকাকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। মাকে হত্যার শাস্তি হিসাবে কুঠার তার হাতেই লেগে থাকে। অনেক তপস্যা আর হিমালয়ে ব্রহ্মপুত্রের জলে স্নান করার পর পরশুরাম পাপমুক্ত হন। তার হাত থেকে খসে পড়ে কুঠার।

এরপর ব্রহ্মপুত্রের সেই পবিত্র জল মর্ত্যের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পরশুরাম তার কুঠারটিকে লাঙ্গলের মতো করে টানতে টানতে পর্বত থেকে ব্রহ্মপুত্রের ধারা নিয়ে আসেন সমভূমিতে। অনেক দিন পর নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে এসে থামে তার লাঙ্গলরূপী কুঠার। ওই এলাকার নাম হয় লাঙ্গলবন্দ।

প্রতিবছর বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে 'পাপমুক্তির' এই স্নানোৎসবে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা থেকে আসা লাখো মানুষ অংশ নেন।

আয়োজক কমিটির সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এবার উৎসব ঘিরে ব্রহ্মপুত্র নদের ১৮টি স্নানঘাটের সংস্কার, কাপড় পরিবর্তনের কক্ষ ও অস্থায়ী শেচৈাগার নির্মাণ, পানীয় জল সরবরাহ এবং ঘাট এলাকায় নদের কচুরিপানা অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বি এম কুদরত-এ-খুদা জানান, পূণ্যার্থীদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৪৭টি নলকূপ বসানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ১০০ অস্থায়ী শৌচাগার।

এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবকে ঘিরে ৩ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ১২০০ পুলিশ। তীর্থস্থানের ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে ৫০টি সিসি ক্যামেরা।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, 'এছাড়া পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকে পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি নদীতে নৌপুলিশ কাজ করছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

17h ago