কম দামে ২০ পয়েন্টে মাংস-ডিম বিক্রি, মধ্যবিত্তের স্বস্তি

পবিত্র রমজান মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রাজধানীর ২০টি স্পটে সাশ্রয়ী মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ছবি: দীপন নন্দী/স্টার

রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার থেকে হতাশা নিয়েই ফিরছিলেন এম এ খায়ের চৌধুরী। কিছুদূর হেঁটে সেগুন রেঁস্তোরার সামনে গেলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একটি ভ্যানের কথা জানতে পারেন। সেই রেফ্রিজারেটেড ভ্যান থেকে ১ কেজি গরুর মাংস এবং এক ডজন ডিম কিনে বাসায় ফেরেন তিনি।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম বেশি থাকায় বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরছিলাম। খোঁজ পেয়ে এখানে এলাম।'

'নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এই ভ্যানের ব্যবস্থা থাকলেও এখন জিনিসপত্রের দাম যে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে তাতে মধ্যবিত্তেরও এ ভ্যান থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে,' বলেন তিনি।

রমজানের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর ২০টি স্থানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। গরুর মাংস কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস কেজি ৯৪০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ ৮০ টাকা লিটার ও ডিম প্রতিটি ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল শনিবার সকালে সস্তায় দুধ, মাংস ও ডিম বিক্রি হচ্ছে এমন কয়েকটি পয়েন্টে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তারা বলছেন, এসব পয়েন্টে নিম্ন আয়ের লোকদের তুলনায় চাকরি এবং স্থিতিশীল আয়ের লোকের সংখ্যাই বেশি।

বাজারদরের চেয়ে সস্তা হারে দাম নির্ধারণ করা হলেও অধিকাংশ পণ্যের দামই নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে।

বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনের সড়কে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে এসেছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ে কর্মরত মাজেদুর রহমান। তিনি ১ ডজন ডিম ও ১ কেজি মুরগি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন।

সচিবালয়ের আরেক কর্মী কায়জুল হক ভ্যান থেকে ৩০টি ডিম, ১ কেজি গরুর মাংস ও ১ কেজি মুরগি কিনেছেন। কিন্তু শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে খাসির মাংস কিনতে পারেননি তিনি।

সেগুনবাগিচা বিক্রয় কেন্দ্রে লাইনের মাঝখানে ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা জসিম। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি দুধ, ডিম ও মাংস কেনেন।

তিনি বলেন, 'গরুর মাংস বাইরে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। এখানে ৬৪০ টাকা৷ এটা স্বস্তির বিষয় যে আমরা এখানে সস্তায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাচ্ছি।'

গৃহিণী আরোহী বলেন, 'নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে পরিবারের খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এখান থেকে কেনাকাটা করে পরিবারের খরচ কিছুটা হলেও কমানো যাবে। দুধ, মাংস ও ডিম পেয়েছি। সবকিছু ভালো মনে হচ্ছে। বাজারের চেয়ে ভালো।'

বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিপরীতে বিক্রয় কেন্দ্রের ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা জানান, শনিবার শতাধিক মানুষ ভ্যান থেকে পণ্য কিনেছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা ১০০ কেজি গরুর মাংস, ৫০ কেজি ব্রয়লার মুরগি, ১৫০০ ডিম, ১৫০ লিটার দুধ ও ২০ কেজি খাসির মাংস বিক্রি করেছি। আমরা জানি না কে ধনী, কে গরীব। যারা লাইনে দাঁড়ায় তাদের কাছে আমি পণ্য বিক্রি করি।'

পবিত্র রমজান মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রাজধানীর ২০টি স্পটে সাশ্রয়ী মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

মোহাম্মদপুরের আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি, জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুরের ৬০ ফুট সড়ক, আজিমপুরের মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, মিরপুরের কালশী, খিলগাঁও রেলগেট, নাখালপাড়ার লুকাস মোড়, সেগুন বাগিচায় কিচেন মার্কেট, মোহাম্মদপুরের বসিলা, উত্তরার দিয়াবাড়ি, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী, হাজারীবাগ, বনানীর কড়াইল বস্তি, কামরাঙ্গীরচর ও রামপুরা- এই ২০টি স্পটে অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র বসছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

3h ago