মুশফিকের স্বস্তি, স্বস্তি বাংলাদেশেরও

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নির্ভরযোগ্য ব্যাটারের কথা চিন্তা করলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবার আগেই আসে মুশফিকুর রহিমের নাম। সেই মুশফিকই সাম্প্রতিক সময়ে যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। টানা ব্যর্থতায় তার দলে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। সেট হলেও ইনিংস লম্বা করতে পারছিলেন না। তবে স্বস্তির খবর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেখা গিয়েছে ভিন্ন এক মুশফিককে। স্বস্তি বাংলাদেশেরও।

এইতো দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরের কথা। দেশে ফিরে সপ্তাহ না পেরুতেই টি-টোয়েন্টি সংস্করণকে বিদায় জানান মুশফিক। কিছুটা অভিমান নিয়েই। প্রচণ্ড সমালোচনায় বিদ্ধ হয়ে হুট করেই অবসরের ঘোষণা দেন। কিন্তু অবাক হয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তাকে ফেরানোর চেষ্টাও হয়নি। বরং যেন খুশিই হয়েছিলেন। কারণ পরের বিশ্বকাপ নিয়ে তখন নতুনভাবে দল গড়ার পরিকল্পনা ম্যানেজমেন্টের।

চলতি বছরের শেষে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এ বিশ্বকাপের আগেও নিজেদের সেরা দলের সন্ধানে টাইগাররা। আয়ারল্যান্ড সিরিজকে সামনে রেখে এরমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বিশ্রামের কথা বলে এক অর্থে বাদ দেওয়া হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে। আলোচনা ছিল মুশফিককে বিশ্রাম দেওয়া নিয়েও।

কারণ সাম্প্রতিক সময়ে রানের দেখা পাচ্ছিলেন না এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এর আগের ১২ ইনিংসে ফিফটি ছিল মাত্র একটি। আর সেই রান করতেও বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। ব্যাটিংয়ে স্বাভাবিক সাবলীলতা ছিল না। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকেই সাবলীল। সে ধারায় এদিন পেলেন তিন অঙ্কের ছোঁয়া।

মুশফিকের এ সেঞ্চুরিতে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল টিম ম্যানেজমেন্টও। মাহমুদউল্লাহকে 'বিশ্রাম' দেওয়া নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। মুশফিক রান না পেলেও হয়তো বিকল্প চিন্তা করতে হতো তাকে নিয়েও। সেক্ষেত্রে সমালোচনার ঝড় আরও বাড়ত। আর এমনিতেই কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের তরুণদের প্রতি প্রীতির কথা সবারই জানা।

মুশফিক অবশ্য নিজেকে ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন আগের ম্যাচেই। ৪৪ রান করে আউট হলেও খেলেছিলেন অসাধারণ সব শট। এদিনও ধরে রাখেন ধারা। যেই রিভার্স সুইপ ও স্কুপ করে আউট হয়েছে অসংখ্যবার, এদিন তাও করেছেন অবলীলায়।

এদিন গ্রাহাম হিউমের করা ইনিংসে শেষ বলে ডিপ মিডউইকেটে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে পূরণ করেন নিজের সেঞ্চুরি। এরজন্য খেলতে হয় ৬০ বল। যা বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম। এর আগে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান।

আর এ সেঞ্চুরিটি করেছিলেন নিজের স্বাভাবিক অবস্থান ছেড়ে। অর্থাৎ ছয় নম্বরে। তার ক্যারিয়ারের আগের আটটি সেঞ্চুরির সবগুলোই এসেছিল চার নম্বর পজিশনে। এই পজিশনে তিনি ৪২.৩৯ গড়ে তিনি করেছেন সর্বোচ্চ ৪৩৬৭ রান। আর ছয় নম্বর পজিশনে ৫৩ ইনিংসে ৩৫.৫৬ গড়ে হলো ১৪৫৮ রান।

Comments

The Daily Star  | English

Elections entirely Bangladesh's internal matter: Shafiqul

'Wounds caused by crimes against humanity perpetrated by AL still fresh,' says CA's press secretary

1h ago