চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি: দাবি ছিল ৩০ হাজার, পরিপত্রে ১১ হাজার টাকা

চা শ্রমিক আন্দোলন
ফাইল ফটো স্টার

চা শ্রমিকদের ২০ মাসের বর্ধিত বকেয়া মজুরির দাবি ছিল ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু শ্রম অধিদপ্তরের পরিপত্রে বলা হয়েছে চা শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি হিসেবে জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা করে পাবেন।

শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর সই করা একটি পরিপত্র গতকাল বুধবার জারি করা হয়।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান মতবিনিময় করেছেন। প্রতিমন্ত্রী চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি থেকে জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে বলেন।

এ অর্থ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে জানানো হয়। যার মধ্যে প্রথম কিস্তি আগামী ৭ মার্চের আগেই পরিশোধ করতে হবে। বাকি দুই কিস্তি পরিশোধের সময় চা শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন।

গত বছর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে চা শ্রমিকরা বর্ধিত মজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা পেলেও ২০২১ এর জানুয়ারি থেকে আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত সময়ের জন্য বর্ধিত মজুরির বকেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ চেয়ারম্যান শাহ আলম এই প্রতিবেদককে জানান, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরে সবার মতামতের পরিপ্রেক্ষিতেই বকেয়া মজুরি দেওয়ার ঘোষণাটি আসে। এখানে সব পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে ৫০ টাকা। ৫০ টাকা হারে হলে ২০ মাসের বকেয়া বাবদ ৩০ হাজার টাকা হওয়ার কথা। তারা যে পরিপত্র ঘোষণা করেছেন তা ১৮ টাকা করে। আমরা কমিটি নিয়ে বসব।

তিনি বলেন, আমরা দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা চেয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী দিলেন ১৭০ টাকা চা শ্রমিকরা মেনে নিয়েছেন। এটাও যদি চা শ্রমিকরা মেনে নেন তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। আমরা কিন্তু এখানে কোনো স্বাক্ষর দিইনি।

চা শ্রমিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর চিত্ররঞ্জন রাজবংশী বলেন, চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকরাও বকেয়া মজুরি প্রাপ্তির বিষয়ে হিসেব নিকেশ করছেন। তাদের মতে এটি প্রাপ্য। চা শ্রমিক নেতারাও সেই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। সেই মিটিং থেকেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে। আর চা শ্রমিক নেতারা মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। তারা মালিকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করছেন। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন চা শ্রমিকরা। এর দায় নেতাদেরই নিতে হবে।

গবেষক ও সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ফিলিপ গাইন ডেইলি স্টারকে বলেন, চা শ্রমিকদের প্রতি সবসময় অন্যায় হয় এবারও অন্যায় হলো। চা শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি পূরন হলো না। সরকারি বিভিন্ন সংগঠন আছে তারা মূলত মালিকদের স্বার্থই বেশি রক্ষা করে। আর এখানে তাই হলো।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আরিফ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
government reduces heart stent prices in Bangladesh

Govt slashes heart stent prices by up to Tk 88,000

Health ministry revises rates for US-made coronary stents to ease patient costs

1h ago