‘আ. লীগ নির্বাচিত হলেও আপত্তি নেই কিন্তু জনগণের ভোটে আসতে হবে’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত নবাবগঞ্জের সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হলেও আপত্তি নেই, কিন্তু তাদের জনগণের ভোটে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে নবাবগঞ্জের পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে সোচ্চার হয়ে সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, আমরা ১০ দফা দিয়েছি। তোমরা অবিলম্বে পদত্যাগ করো, সংসদকে ভেঙে দাও এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দাও। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষভাবে একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। জনগণ সেখানে ভোট দেবে। যার ভোট সে দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে। সেখানে যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে আসে, আসুক। আপত্তি নেই। কিন্তু জনগণের ভোটে আসতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এই নির্বাচন (জাতীয় নির্বাচন) তারা (সরকার) করতে চায় আবার আগের মতো। আবার আগের মতো ভোট লুট করে নিয়ে যাবে, চুরি করে নিয়ে যাবে। আমরা কি সেই নির্বাচন করতে দেবো? আমরা কি রুখে দাঁড়াব? রুখে দাঁড়াব। আমাদের অস্তিত্বর জন্য, আমাদের অধিকারের জন্য, আমাদের বাংলাদেশেকে রক্ষা করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য আমাদের আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। আমরা বার বার মার খাচ্ছি বাংলাদেশের মানুষ। এবার আর মার খেতে রাজি নই।'

'সরকার যদি নিরপেক্ষ থাকত আপনার ভোট আপনি দিতে পারতেন। যাকে খুশি তাকে দিতে পারতেন। এখন কী সেটা হয়? হয় না। এখন ওদের (আওয়ামী লীগ সরকার) কথা হচ্ছে, আমার ভোট আমি দেবো, তোমার ভোটও আমি দেবো', যোগ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এজন্য এখন মানুষ বলতে শুরু করেছে, আগে যদি জানতাম ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। এই নৌকা মানুষ নেবে না। কারণ এই নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগ এদেশের অর্থনীতিকে ধবংস করে দিয়েছে। চুরির শেষ নেই এবং কাজ না করে টাকা নিয়ে চলে যায়। ১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকা বিল করে নিয়ে চলে যায়।'

তিনি আরও বলেন, 'পদ্মাসেতু করেছে খুব ভালো। কিন্তু পদ্মাসেতু ১০ হাজার কোটি টাকায় ৩০ হাজার কোটি টাকা করেছে। আর পাতাল রেল করে, কী কী করে। উন্নয়নের নদী বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উন্নয়নে সাধারণ মানুষের উপকার হচ্ছে না। এই সরকার যদি আবার আসে তাহলে এ দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।'

নবাবগঞ্জ শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দুপুর আড়াইটায় শুরু হয়ে পদযাত্রা ২ কিলোমিটার দূরে বক্সবাজার মোড়ে এসে শেষ হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা জেলা আহ্বায়ক খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চলনায় সমাবেশে বিএনপির শিরিন সুলতানা, দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, তমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন বক্তব্য দেন।

পদযাত্রায় মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মিডিয়া সেলের শায়রুল কবির খান, স্থানীয় নেতা রাশেদুল ইসলাম, ইয়াসিন ফেরদৌসসহ জেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও যুব দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।

গ্যাস-বিদ্যুৎ-নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি সারাদেশে জেলায় জেলায় ২৫ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা করে। রোববার ঢাকা জেলার এই পদযাত্রার কর্মসূচিটি হলো।

ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এরা ফুলে ফুলে সব কলা গাছ হয়ে গেছে। যার পায়ে স্যান্ডেল ছিল সে এখন বিরাট গাড়ি চালায় এবং বড় বড় বাড়ি তৈরি করেছে। সব আওয়ামী লীগের লোকেরা। এই বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চুষে নিয়ে, ট্যাক্স চুরি করে নিয়েছে।'

'আমরা এই সংগ্রাম শুরু করেছি বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য। বাংলাদেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৯০ এর আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ সবকিছু তরুণ-যু্বকরা করেছে। তরুণদের বলব, এগিয়ে আসুন। পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব', যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

Comments

The Daily Star  | English

Fulfilling sky-high expectations Yunus govt’s key challenge

Says ICG report on completion of interim govt’s 100 days in office

2h ago