ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা: যৌথ অভিযান চালাবে সিটি করপোরেশন-ফায়ার সার্ভিস

fire service logo
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে অগ্নি নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেই এমন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের খোঁজে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে এই অভিযান চলবে।

আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ কথা জানান।

তিনি বলেন, 'সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা অভিযানে যাবো, যেসব ভবনে অগ্নি নিরাপত্তার নিয়মগুলো মানা হয়নি সেগুলো দেখবো। অন্য বিষয়গুলো নির্ধারিত ডিপার্টমেন্ট দেখবে।'

বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী যেসব ভবন নির্মিত হয়নি সেগুলো চিহ্নিত করতে তারা কাজ করছেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুরান ঢাকায় অবৈধ কেমিক্যালের দোকান স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের কাজ অগ্নিনির্বাপণ করা, কারখানা সরানোর কাজ নয়। নিমতলি ও চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকায় এমন কোনো দোকানের লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না। যা আছে সেগুলো অবৈধভাবে হচ্ছে।'

সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন উদ্ধার কাজ শেষে ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধি দলের দেশে ফেরার বিষয়ে তিনি বলেন, 'উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি দল ১ জনকে জীবিত ও ২৩টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশও ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন। আমাদের ১৪ হাজার ফায়ার সার্ভিস কর্মী আছে যারা সবাই প্রশিক্ষিত। আমাদের উন্নত যন্ত্রপাতিও আছে। তবে বড় ধরনের দুর্যোগের ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই যথেষ্ট নয়। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কাজ করছি। এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে আমরা প্রশিক্ষণ ও মহড়া চালিয়ে যাচ্ছি।'

'আমাদের ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরির লক্ষ্য ছিল, যার মধ্যে আমরা ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করেছি। আমরা ১ লাখের বেশি গার্মেন্টস শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এছাড়াও, আমরা স্কুল এবং কলেজগুলোতে প্রশিক্ষণও দিচ্ছি,' বলেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিসে আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

গত রোববার রাতে গুলশানের একটি আবাসিক ভবনে আগুনের ঘটনায় অন্তত ২ জন নিহতের পর এই ঘোষণা এলো।

আগুনের পর পরিদর্শনে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস জানায়, 'ভবনটির ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। সেফটি প্ল্যান নেওয়ার কথা থাকলেও, নেওয়া হয়নি। ভবনটি অত্যাধুনিক হলেও, এর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে।'

ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, গত বছর ঢাকায় ১ হাজার ১৬২টি ভবন পরিদর্শন করে ১৩৬টি ভবন 'খুব ঝুঁকিপূর্ণ' এবং ৪৯৯টি 'ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ৫ হাজার ৮৬৯টি স্থাপনা ও ভবন পরিদর্শন করে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় ৬১৭টি ভবন 'খুব ঝুঁকিপূর্ণ' এবং ১ হাজার ৬০৬টি ভবনকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

এছাড়া পুরান ঢাকায় অসংখ্য রাসায়নিক ও প্লাস্টিক কারখানা অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলেও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

8h ago