শহীদ মিনার কাপড়ে ঢেকে বেদিতে মঞ্চ, জুতা পায়ে এমপিসহ অতিথিরা
জামালপুর সদর উপজেলার বটতলা উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনসহ অতিথিদের সবাই জুতা পায়ে ওই মঞ্চে উঠেন। ভাষার মাসে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানানো হয়েছে। সেখানে মূল শহীদ মিনারটি কাপড় দিয়ে পেছনে ঢেকে ফেলা হয়। দুপুর ১টার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. মোজাফফর হোসেনসহ অতিথিরা সবাই জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম।
এ বিষয়ে জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে পদচারণ করা ভাষা শহীদদের প্রতি অবমাননা এবং আইন অমান্য করা। যারা এ ধরণের আচরণ করবেন, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত।'
বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও করা হয়েছে।'
জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সবাই সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি।'
এ ঘটনায় সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেটা যে শহীদ মিনার, আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি, এটি একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলতো, সেটা শহীদ মিনার, তাহলে আমি জুতা পায়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।'
Comments