মুক্তচিন্তার পথিক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। স্কেচ: সজীব

প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছরে পদার্পণে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার প্রচার ও প্রসারে নিরলস কাজ করা ১২ কীর্তিমানকে 'সেনটিনেল অব ফ্রিডম অব থট' সম্মাননা দিচ্ছে দ্য ডেইলি স্টার।

আজ শনিবার ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার পাটাতন তৈরিতে অগ্রগামী এবং চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারবন্ধ এই ১২ সূর্যসন্তানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

তাদেরই একজন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে অভিহিত করা হয় 'জাতির শিক্ষক' হিসেবে। তিনি বাংলাদেশের একজন শীর্ষ বুদ্ধিজীবী, যাকে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার বিষয়ে শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সমালোচক, ইতিহাসবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং কর্মী হিসাবে বিস্তৃত জ্ঞান এবং সমালোচনামূলক অন্তর্দৃষ্টির সমন্বয়ে তিনি একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন। ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ক্ষমতাবানদের কাছে প্রকৃত সত্যগুলো তুলে ধরে আসছেন।

১৯৩৭ সালে মুন্সিগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার জীবনের ৪০ বছরেরও বেশি সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা, লেখালেখি ও নেতৃত্বদানে উৎসর্গ করেছেন। তিনি শুধু একজন শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীই নন, একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিও বটে, যিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই সংস্থাগুলো বাংলাদেশের বিদ্যায়তনিক পরিসরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি ইউনিভার্সিটি বুক সেন্টার ও দ্য সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন হিউম্যানিটিজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২টি প্রথম সারির সাময়িকী সম্পাদনা করেন। এগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা (১৫ বছর) ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টাডিজ (৯ বছর)।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্বৈরাচার ও সাম্রাজ্যবাদের কঠোর সমালোচক। তিনি শ্রমিক, কৃষক, নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের জন্য নিরন্তর লড়াই করে চলেছেন। তিনি সমাজ রূপান্তর অধ্যয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি গবেষণা ভিত্তিক সাময়িকী 'নতুন দিগন্ত' প্রকাশ করে থাকে। একইসঙ্গে তিনি বামপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের সাপ্তাহিক পত্রিকা 'সাপ্তাহিক সময়' সম্পাদনার কাজ করেন।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মুগ্ধতা জাগানিয়া কাজগুলো তাকে একজন প্রতিথযশা বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তচিন্তার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্থায়ী অবস্থান দিয়েছে। সাহিত্যের জগতে তার প্রধান কাজগুলো হল 'জাতীয়তাবাদ, সম্প্রদায় ও জনগণের মুক্তি', 'গণতন্ত্রের পক্ষে বিপক্ষে', 'রাষ্ট্রের মালিকানা', 'উপনিবেশের সংস্কৃতি', 'পিতৃতান্ত্রিকতার বিপক্ষে'। এসব লেখনী প্রগতিশীল ও  স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সত্য ও ন্যায়বিচারের প্রতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর অবিচল অঙ্গীকার তাকে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার একটি শক্তিশালী প্রতীক এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অনুপ্রেরণার উৎস করে তুলেছে। দ্য ডেইলি স্টার আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে জাতির এই প্রিয় শিক্ষাবিদ এবং পথপ্রদর্শককে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Secretariat employees protest against 'stricter' govt service law

Secretariat employees protest against 'stricter' govt service law

From 9:30am, officers and staff started gathering in front of building no. 6 at the Secretariat's Badamtola.

1h ago