অবশেষে সেই বাসন্তীর পাশে উপজেলা প্রশাসন

বাসন্তী বালা। ছবি: স্টার

অবশেষে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের সেই জেলেকন্যা বাসন্তী বালার (৬৮) পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ভরণপোষণের জন্য তাকে প্রতি মাসে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

গত জানুয়ারি থেকে এই সহযোগিতা দেওয়া শুরু হয়েছে। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই সহযোগিতা পাবেন বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া, বসবাসের জন্য বাসন্তী বালাকে দেওয়া হয়েছে একটি পাকা ঘর।

বাসন্তী বালা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। প্রতি মাসে তিনি সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতাও পান।

বাসন্তী বালা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জেলেপাড়া গ্রামের মৃত কান্দুরা রাম দাস ও মৃত শুটকী বালা দাসের মেয়ে। ৪ ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। তার ছোট ভাই বিষু চন্দ্র দাস ও ছোট বোন দুর্গা রানী দাস মারা গেছেন। বেঁচে আছেন বড় ভাই আশু চন্দ্র দাস (৮০)। বাসন্তী বালা মৃত বিষু চন্দ্র দাসের স্ত্রী নিরোবালা দাসের সঙ্গে বসবাস করছেন।

নিরোবালা দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খুব কষ্টে ছিলেন বাসন্তী। প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আর মাঝে মাঝে ত্রাণ সহযোগিতায় কোনো রকমে চলতো তার জীবিকা। আমাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। দিনমজুরি করে প্রতিদিন ১২০-১৩০ টাকা রোজগার করি।'

তিনি বলেন, 'উপজেলা থেকে বাসন্তীকে প্রতি মাসে ভরণপোষণের জন্য টাকা দিচ্ছে। তাকে একটি ঘর ও টেলিভিশন দিয়েছে। এখন অনেকটা সহজ হবে জীবনযাপন।'

বাসন্তীর বড় ভাই আশু চন্দ্র দাস (৮০) বলেন, 'বাসন্তী আমার চেয়ে ১১-১২ বছরের ছোট। জন্ম থেকেই সে প্রতিবন্ধী। স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় বাসন্তীকে বিয়ে দিয়েছিলাম ১৯৮০ সালে। সেই সংসার টেকেনি।'

তিনি বলেন, 'আমার বোনের দারিদ্রতার গল্প অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিলেও তার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখনো সেই দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করেই সে বেঁচে আছে।'

চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান শাহীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগের জনপ্রতিনিধিরা কেন বাসন্তীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি নির্বাচিত হওয়ার পরই বাসন্তীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা সত্য যে বাসন্তীর দারিদ্রতার গল্প চিলমারীতে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে।'

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, 'ছাত্র জীবনে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসন্তী বালার গল্প অনেক শুনেছি। চিলমারীতে ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর তার খোঁজখবর নেই। আমরা নিশ্চিত করেছি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেন বাসন্তী উপজেলা প্রশাসন থেকে আর্থিক সহযোগিতা পান। আমি ব্যক্তিগতভাবেও জেলেকন্যা বাসন্তীর খোঁজ রাখবো।'

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda acquitted in Zia Charitable Trust graft case

The HC scraped the trial court verdict that sentenced Khaleda and two others in the same case.

15m ago