মুশফিকের ‘রহস্যময় জ্বরে’ ছন্দ নষ্ট রংপুরের!

Nurul Hasan Sohan
আউট হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরও উত্তেজিত ছিলেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাটিংয়ে রান না পেলেও মাঠে কোন চোট পাননি মুশফিকুর রহিম। তবু তাকে শুরু থেকে ফিল্ডিংয়ে নামতে দেখা যায়নি, জানানো হয় জ্বরে আক্রান্ত তিনি। তবে ১৭তম ওভারের পর সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরে আসেন মুশফিক। তার ফেরার সময়ে আবার কিপার বদলানো নিয়ে অনেকটা সময় নষ্ট করে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এতে করে ভালো অবস্থানে থেকেও ছন্দ নষ্ট হয়ে দিক হারানোর অভিযোগ করেছে রংপুর রাইডার্স।

মিরপুরে মঙ্গলবার রাতে বিপিএলের ফাইনালে উঠার ম্যাচে এক পর্যায়ে শক্ত অবস্থানে ছিল রংপুর। সিলেটের ১৮২ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৭ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৫০।

৮২ রানের জুটি গড়ে ক্রিজে ছিলেন ৬৬ রান করা রনি তালুকদার ও ৩৩ রানে থাকা নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু ১৭ ওভার শেষে তখন অপ্রত্যাশিতভাবে মিনিট পাঁচেক বন্ধ থাকে খেলা। এরপর খেলা শুরু হতেই আউট হয়ে যান সোহান, রনিও টেকেননি। বাকিরাও এসে মেলাতে পারেননি সীমকরণ। ম্যাচটি তারা হেরে যায় ১৯ রানে। নাটকীয়ভাবে মোড় ঘুরিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। 

ম্যাচ শেষে এই বিরতিকে ছন্দ নষ্ট হয়ে হারের কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন রংপুরের প্রধান কোচ সোহেল ইসলাম, 'তখন খেলার মোমেন্টাম আমাদের দিকে ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় জাকির বের হলো (কিপিং প্যাড, গ্লাভস পরতে)। উইকেটকিপার বদল হলো। একটা মোমেন্টাম শিফট ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় মোমেন্টাম আসলে ব্রেক ডাউন হয়ে যায়। এটা টি-টোয়েন্টিতে একটা দলের জন্য, একটা যখন ফ্লো থাকে তখন সেটা বাধাগ্রস্ত হলে এরকম হতে পারে (ধস)। সেটাই হয়েছে।'

সিলেটের ফিল্ডিংয়ে মুশফিককে না দেখে কারণ জানতে চেয়ে তার জ্বরের কথা জানতে পারে রংপুর। চতুর্থ আম্পায়ারদের কাছ থেকে পাওয়া এই ব্যাখ্যা হজম হয়নি রংপুরের,  'জানি না তাদের কৌশল ছিল কিনা (খেলা বন্ধ রাখা)। যেটা হয়েছে মুশফিক বেশ স্বাভাবিকভাবে ব্যাট করেছে। আমি জিজ্ঞেস করেছি চতুর্থ আম্পায়ারকে যে সে কীসের জন্য বাইরে আছে। তারা বলেছে  তার জ্বর এসেছে, সেজন্য  বাইরে। আমার কথা হচ্ছে জ্বর যখন আসবে এর দায়িত্ব কি অন্য দল নিবে? নিশ্চয়ই না। মাঠের মধ্য থেকে যদি চোট হয় সেক্ষেত্রে যেটা নিয়ম আছে সেটা  হবে। যদি জ্বর আসে…সেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। পরবর্তীতে মুশফিক যখন নামে তখন বেশ কিছু সময় চলে গেছে। এটা এক-দুই মিনিটের ব্যাপার না। পাঁচ-ছয় মিনিটের ব্যাপার। ওই সময় আমরা বেশ ভালো অবস্থায় ছিলাম। একটা ফ্লো ছিল। আমার কাছে মনে হয় এই জায়গায়  এই ফ্লো নষ্ট হয়ে যাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ ছিল।'

১৮তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান এর আগে বেশ ভালো খেলতে থাকা সোহান। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ডাগআউটের দিকে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। সোহেল জানান, খেলা দ্রুত শুরু করা নিয়ে আম্পায়ারদের চাপ না দেওয়াতেই অধিনায়ক টিম ম্যানেজমেন্টের উপর ক্ষেপেছিলেন তিনি,  'সে বলছিল কেন আমরা এই সময় দ্রুত খেলা শুরু করতে বলি নাই (আম্পায়ারদের)'

'রনি আর সোহান যেটা বলছিল (আম্পায়ারকে) মুশফিক কেন বাইরে আছে। এটা আমরা পরিষ্কার ছিলাম না। কেউ বলছিল আঙুলে ব্যথা পাওয়ার জন্য বাইরে আছে, কেউ বলছে জ্বর আসছে।'

জ্বরে থাকা মুশফিক আর নামবেন না ধরে নিয়েছিল রংপুর। তার বদলে শুরু থেকে কিপিং করছিলেন আকবর আলি। ১৭তম ওভারের পর সাধারণ ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন মুশফিক। আকবরকে এর খানিক পর মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। তারও মিনিট খানেক পর জাকির হাসান মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে গিয়ে প্যাড ও গ্লাভস পরে কিপিং করতে আসেন। জ্বরের কথা বলে একজন খেলোয়াড়কে বাইরে রাখার পর তাকে আবার ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফেরানো, কিপার বদলাতে সময় ক্ষেপণ ইত্যাদি কারণে সিলেটের দিকে ছন্দ নষ্টের ইঙ্গিত রংপুরের,   'আমাকে যেটা বলেছে মুশফিকের জ্বর আসছে সেজন্য মুশফিক কিপিং করতে পারছে না। আমাদের অধিনায়ক এই বিষয়ে জানত না। আমাদের এই ব্যাপারে কিছু তথ্য দেয়া হয় নাই।'

'জ্বর আসছে…পরে আবার এমন এক সময় নেমেছে যখন মোমেন্টাম নষ্ট হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

8h ago