নেচার ইনডেক্স

ফিজিক্যাল সায়েন্স গবেষণায় পাকিস্তান-নেপাল-শ্রীলঙ্কারও পেছনে বাংলাদেশ

 ফিজিক্যাল সায়েন্স গবেষণায় পাকিস্তান-নেপাল-শ্রীলংকারও পেছনে বাংলাদেশ
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল 'নেচার'-এর ২০২২ সালের 'ফিজিক্যাল সায়েন্স' বা ভৌত বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১০২তম। তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিকে ছাড়িয়ে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে চীন।

২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রকাশিত গবেষণার তথ্য নিয়ে এই ইনডেক্স তৈরি করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে গবেষণায় কোন দেশ কী পরিমাণ অবদান রেখেছে তার ভিত্তিতে র‌্যাংকিংটি তৈরি করা হয়েছে।  

২০২২ সালের ইনডেক্স অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১০তম। এ ছাড়া পাকিস্তান ৩৯, শ্রীলঙ্কা ৮৬তম, নেপাল ৯১তম ও বাংলাদেশ ১০২তম অবস্থানে রয়েছে।

এ ছাড়া ইনডেক্সে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া ৮৮, কেনিয়া ৯২, তানজানিয়া ৮৩তম অবস্থানে থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।

নেচার ইনডেক্সে চীনের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় জার্মানি, চতুর্থ যুক্তরাজ্য, পঞ্চম জাপান, ষষ্ঠ দক্ষিণ কোরিয়া, সপ্তম ফ্রান্স, অষ্টম ইতালি, নবম সুইজারল্যান্ড ও দশম অবস্থানে রয়েছে ভারত।

ইনডেক্স অনুযায়ী, বাংলাদেশ অন্য যে সব দেশের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণার কাজ করে থাকে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, ডেনমার্ক ও ভারত।

নেচার ইনডেক্সে ২০২২ সালে বাংলাদেশের ফিজিক্যাল সায়েন্স বিষয়ে 'এসিএস ন্যানো' ও 'নেচার কমিউনিকেশনে' মাত্র ২টি আর্টিকেলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২২ সালের ইনডেক্সে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিকে ছাড়িয়ে চীনের শীর্ষ স্থান দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চীনের এক নম্বরে চলে আসার প্রথম সূত্র হলো প্রথমে কিছু ওয়ার্ল্ড ক্লাস বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট বানানো। তারপর শিক্ষকতা ও গবেষণায় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং এরপর ট্যালেন্ট হান্ট। আজ তারা সুফল পাচ্ছে। এদিকে এশিয়ার মধ্যে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াও খুব ভালো করছে।'

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বাংলাদেশের বিষয়ে বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ায় গবেষণায় বাংলাদেশ তলানিতে। এই লজ্জা কোথায় রাখি? ...আর আমাদের সরকার বলে পৃথিবী নাকি আমাদের উন্নয়ন দেখে অবাক! শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশ দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণায় এর চেয়ে ভালো করা সম্ভব না। তারপর এখন যে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে, সেটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের অবস্থান আরও তলানিতে নামবে।'

তিনি আরও জানান, 'যেখানে ইউনেস্কো বলে একটি দেশকে অন্তত তার জিডিপির ৫.৫ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ দেওয়া উচিত, সেখানে আমরা দেই ১.৮ শতাংশ থেকে ২.১ শতাংশের মতো। এই টাকার বেশির ভাগই চলে যায় চুরি-চামারি আর অবকাঠামোর উন্নয়নে। সত্যিকারের শিক্ষা ও গবেষণায় তেমন ব্যবহারই করা হয় না। আমাদের অবহেলিত শিক্ষা ও গবেষণার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই খাতে উন্নতি করতে হলে আমাদের উচিত জিডিপির ৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া। আমরা মেগা প্রকল্প গ্রহণ করি অবকাঠামো উন্নয়নে। এর চেয়ে বড় বলদামি কি আর হয়? আগে দালানকোঠার অবকাঠামো বানাবো নাকি মানুষের ব্রেইন, মেধা গঠন করব? যতদিন আমাদের সরকারেরা এটা না বুঝবে ততদিন আমরা তলানিতেই নামতে থাকব।'

 

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

3h ago